শ্রীনগর: কাশ্মীরকে বারবার আন্তর্জাতিক সমস্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা বন্ধ করে, পাকিস্তানের উচিত নিজেদের ‘ঘর সামলানো’, অর্থাৎ, নিজেদের দেশকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করার দিকে মনোনিবেশ করা। সোমবার (২৬ জুন), জম্মুতে ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি কনক্লেভে’ বক্তৃতা দিতে গিয়ে প্রতিবেশী দেশকে কড়া বার্তা দিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। সম্প্রতি, মার্কিন সফরের সময় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদী যে যৌথ বিবৃতি জারি করেছিলেন, সেই বিষয়ে করা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের সেই প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে এদিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের যৌথ বিবৃতিতে পাকিস্তান অপমানিত বোধ করছে। তাই তারা তাদের সেই পুরনো বিবৃতিই আবার দিয়েছে। তারা বলেছে, কাশ্মীর থেকে বিশ্বের মনোযোগ সরিয়ে নিচ্ছে ভারত। আমি তাদের সঙ্গে একমত। আমরা কাশ্মীর থেকে বিশ্বের নজর দূর করতে সফল হয়েছি। পাকিস্তান সরকারকে আমি বলতে চাই ক্রমাগত কাশ্মীর-কাশ্মীর করে কোনও লাভ নেই। বরং, আপনারা নিজেদের ঘর সামলান।”
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর, ভারত ও আমেরিকা এক যৌথ বিবৃতিতে, সীমান্তের ওই পাড় থেকে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার নিন্দা করেছিল। একই সঙ্গে, পাকিস্তানের মাটিকে যাতে সন্ত্রাসবাদীরা তাদের নিজেদের উদ্দেশ্যে ব্যবহার না করতে পারে, তার জন্য ইসলামাবাদকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারত-মার্কিন যৌথ বিবৃতিতে ‘অবাঞ্ছিত, একতরফা এবং বিভ্রান্তিকর’ বলা হয়েছিল। তারা আরও বলেছিল, সন্ত্রাসবাদের সমালোচনা করার ক্ষেত্রে ইসলামাবাদের উল্লেখ করা হয়েছে। এটা কূটনৈতিক নিয়মের পরিপন্থী বলে জানিয়েছে ইসলামবাদ।
ওয়াশিংটনে মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে, ‘কট্টরপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিপদ’ সম্পর্কেও সতর্ক করেছিলেন। সাফ জানিয়েছিলেন, সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলার ক্ষেত্রে কোনও দ্বিধা থাকতে পারে না। সোমবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপুঞ্জে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, “মুসলিম দেশগুলিও এখন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে।” প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বক্তব্যে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের কথাও উঠে এসেছে। তিনি জানিয়েছেন, পিওকে ভারতেরই অংশ। এই অঞ্চলটি বেআইনিভাবে দখল করে রেখেছে পাকিস্তান। তার মানে এই নয় যে, ইসলামাবাদের কাশ্মীরের বিষয়ে কথা বলার অধিকার আছে। তিনি বলেন, “জম্মু ও কাশ্মীরের একটা বড় অংশ পাকিস্তানের দখলে। ওখানকার মানুষ দেখছেন, ভারতীয় অংশে মানুষ কত শান্তিতে বাস করছে।” প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মতে, পিওকে-কে পাকিস্তানের দখলমুক্ত করতে ভারতের বিশেষ কিছু করতে হবে না। কারণ, শিগগিরই সেখানকার মানুষ নিজেরাই ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার দাবি জানাবেন।