Ratan Tata: ‘ভালো ছেলের মতো চুপটি করে বসো’, আর শুনবে না ওরা, রতন টাটার প্রয়াণে আজ পিতৃহারা ‘গোয়া’-‘স্প্রাইট’রাও
Ratan Tata: মাঝে মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় করা তাঁর বিভিন্ন পোস্ট থেকে টের পাওয়া যায় যে, রতন টাটা পশুদের কতটা ভালবাসেন, খেয়াল রাখেন। টাটা গ্রুপের গ্লোবাল হেডকোয়ার্টারে বিপথগামী কুকুরদের জন্য একটি ক্যানেল তৈরি করা হয়।
নয়া দিল্লি: অম্লান হাসি মুখে, আর সঙ্গে পোষ্য। টাটা সন্সের প্রাক্তন চেয়ারম্যান রতন টাটার কুকুর প্রেম কারোর অজানা নয়। মাঝে মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় করা তাঁর বিভিন্ন পোস্ট থেকে টের পাওয়া যায় যে, রতন টাটা পশুদের কতটা ভালবাসেন, খেয়াল রাখেন। টাটা গ্রুপের গ্লোবাল হেডকোয়ার্টারে পথ কুকুরদের জন্য একটি ক্যানেল তৈরি করা হয়। পোষ্যরা যে তাঁর কাছে কতটা আদরের, তা নাম নির্বাচনেই বোঝা সহজ।
রতন টাটার এক পোষ্যের নাম ‘গোয়া’। তাঁর সামাজিক মাধ্যমের এমন পোস্টে তার ছবি রয়েছে, তার সম্পর্কে লেখা রয়েছে, যাতে বোঝা যায় তিনি কতটা পশুপ্রেমিক ছিলেন। ‘গোয়া’ রতন টাটার সঙ্গে অফিসেও অনেকটাই সময় কাটাত। ‘হিউম্যান অফ বম্বে’ সংস্থার সিইও ক্যারিশ্মা মেহেতা ‘লিঙ্কন্ড ইনে’ তাঁর এক অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছিলেন। তিনি একটি ইন্টারভিউয়ের জন্য রতন টাটার সঙ্গে দেখা করতে মুম্বইয়ের অফিসে গিয়েছিলেন। সে সময় ‘গোয়া’ (রতন টাটার পোষ্য) ঘোরাফেরা করছিল। ‘গোয়া’কে দেখে ভয় পেয়েছিলেন তিনি। কারণ কুকুরের প্রতি তাঁর আগে থেকেই ভীতি ছিল।
ওই মহিলা তাঁর অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, তিনি যে ভয় পেয়েছিলেন, তা তাঁর আচরণে বুঝতে পেরেছিলেন রতন টাটা। ‘গোয়া’র উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘ভালো ছেলের মতো চুপ করে বসো।’ তারপর ক্যারিশ্মা মেহেতা জানান, ৪০ মিনিটের মতো রতন টাটার সঙ্গে কথা বলেছিলেন, ‘গোয়া’ ঠিক একই জায়গায় বসেছিল।
ইনস্টাগ্রামে রতন টাটার একাধিক তাঁর কুকুর-প্রীতির গল্প তুলে ধরে। রাস্তার কুকুরদের দত্তক নিতেন তিনি। যত্ন করে পুষতেন, সেবা করতেন। এমনকী, নিজের অফিসের সামনে তিনি রাস্তার কুকুরদের আদর করতেন, তাও আবার মাটিতেও বসে পড়ে। এ কথা বলতেন তাঁর ঘনিষ্ঠরাই।
View this post on Instagram
এরকমই একটা গল্প ‘স্প্রাইট’ নিয়ে। হ্যাঁ, সেও কুকুর। দুর্ঘটনায় তার পিছনের পা দুটি বাদ যায়। স্প্রাইটের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক ছিল। তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলেন রতন টাটা। কুকুরটির পিছনের পায়ের জায়গায় লাগিয়ে দেওয়া হয় হুইল চেয়ারের মতো দুটি চাকা। যা পেয়ে আবার ছুটে বেড়াতে শুরু করে স্প্রাইট। সেই কুকুরটিকে দত্তক নেওয়ার জন্যই সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি।
বর্ষাকালে কুকুর-বিড়ালদের কথা মাথায় রেখে গত বছরই একটি গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট করেছিলেন রতন টাটা। তিনি আবেদন করেছিলেন, বৃষ্টির মরশুমে চার চাকা স্টার্ট করার আগে অবশ্যই গাড়ির নীচে দেখে নেওয়া উচিত। আসলে বর্ষাকালে অনেক কুকুর, বিড়াল বৃষ্টি থেকে বাচতে গাড়ির নীচে আশ্রয় নেয়। তাদের যাতে আঘাত না লাগে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার ব্যাপারে পোস্ট করেন রতন টাটা।
আজ তাঁর প্রয়াণে যেন ‘আস্তানা’ হারাল ‘গোয়া’, ‘স্প্রাইট’দের মতো বহু পোষ্য।