
নয়া দিল্লি: নজিরবিহীন। রাষ্ট্রপতিকে সময় বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যপালের পাঠানো বিল নিয়ে তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, এমনটাই জানাল শীর্ষ আদালত। তামিলনাড়ু সরকার বনাম তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল মামলাতে এই পর্যবেক্ষণ রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে কোনও বিল নিয়ে রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত নিয়েও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চে শুনানিতে সংবিধানের ২০১ অনুচ্ছেদের অধীনে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নিয়ে বলা হয়। এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, যদি কোনও বিল রাজ্যপাল অনুমোদন বা খারিজ না করে, নিজের কাছে আটকে রাখেন, তবে রাষ্ট্রপতিকে জানাতে হবে যে তিনি বিলে সম্মতি দেবেন কি না। এর জন্য নির্দিষ্ট কোনও সময়সীমা ধার্য করা ছিল না।
শীর্ষ আদালতের তরফে এ দিন বলা হয়, রাজ্যপালের পাঠানো বিল নিয়ে রাষ্ট্রপতিকে তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদি এই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে রাষ্ট্রপতি কোনও সিদ্ধান্ত না নেন, তবে রাজ্য সরকারকে তার কারণ জানাতে হবে। ফাইলেও উল্লেখ করতে হবে বিলে অনুমোদন না দেওয়ার কারণ। রাষ্ট্রপতি ভবন রাজ্য সরকারকে কারণ ব্যাখ্য়া করবে।
রাষ্ট্রপতি যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোনও পদক্ষেপ না করেন, তবে রাজ্য সরকার চাইলে আদালতের দ্বারস্থও হতে পারে। এ দিনের রায়ে সুপ্রিম কোর্টের তরফে স্পষ্ট বলা হয়, রাষ্ট্রপতির ‘পকেট ভেটো’ ক্ষমতা নেই। তাঁকে হয় সম্মতি জানাতে হবে, নাহলে বিল খারিজ করে দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল এন রবির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। এমকে স্ট্যালিনের সরকারের অভিযোগ ছিল, রাজ্যপাল ১২টি বিল আটকে রেখেছেন। এই বিলগুলি সম্পর্কে তিনি কিছুই জানাচ্ছেন না। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যপাল এন রবির কাছে জবাবদিহি চাইলে তিনি জানিয়েছিলেন, কিছু বিল রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো রয়েছে।
এ দিনের রায়ে শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, সংবিধানে রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতির বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্পর্কে নির্দিষ্ট সময়সীমার উল্লেখ না থাকলেও, কোনও বিল অন্ততকাল ফেলে রাখতে পারেন না। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট বলে, “সংবিধানে সময়সীমা বেঁধে না দেওয়া হলেও, যথাযথ সময় উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ রাজ্যপালদের বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায় রয়েছে। রাজ্যপাল, এমনকী রাষ্ট্রপতিও যথাযথ সময়ের মধ্যে বিলের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য।”
এই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানায়, তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আরএনরবি বেআইনিভাবে ১০টি বিল আটকে রেখেছেন। রাজ্যপাল যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত না নেন, তবে আইনি পর্যালোচনা করা হতে পারে।