আহমেদাবাদ: দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সমস্যায় ভুগছিলেন গুজরাটের এক ব্যক্তি। পরিস্থিতি এমনই হয়েছিল যে তিনি নিজের রেস্তোরাঁর কর্মীদেরও বেতন দিতে পারছিলেন না। কিন্তু হঠাৎ করেই সেই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর গ্রেফতারিতে অনেকেই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। পরে পুলিশের থেকে ওই ব্যক্তির কৃতকর্মের কথা জানতে পেরে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন অনেকেই। কী এমন কাজ করেছিলেন ওই ব্যক্তি? পুলিশ জানিয়েছে, নিজের আর্থিক দুরাবস্থা দূর করতে এবং যাবতীয় ধার দেনা শোধ করতে নিজের প্রতিবেশিকেই অপহরণ করেছিলেন ওই রেস্তোরাঁ মালিক। রেস্তোরাঁর ৪ জন কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিবেশিকে অপহরণ করেন। তবে যাবতীয় পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ায় তিনি সমস্যার মুখোমুখি হয়ে পড়েন। জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির নাম মিতু প্যাটেল। গান্ধীনগর পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন ৩৫ বছর বয়সী মিতু। শনিবার কলোল থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও ৭ জন পলাতক।
মার্চ মাসের ৩০ তারিখ অপহরণের ঘটনাটি ঘটেছিল। তাঁর রেস্তোরাঁর চার কর্মী দীর্ঘদিন ধরে টাকা বাড়িয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সেই দাবি পূরণ করতেই এই পন্থা বেছে নেন মিতু। ঘটনার সময় অপহৃত ব্যক্তি বাড়িতে একা ছিলেন। সোলার প্যানেল ঠিক করে দেওয়ার নাম করে একজন তাঁর বাড়িতে ঢোকে। বাকিরা প্রথমজনের সঙ্গে বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল। এবার ওই মহিলাকে দড়ি দিয়ে শক্ত করে বাঁধা হয়। অপহরণকারীরা মহিলার স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। অলকা নামের অপহৃতা ওই মহিলার স্বামী যখন দেখেন তাঁর স্ত্রী নিখোঁজ, তখন তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। মিতু যখন জানতে পারে, পুলিশ অলকার বাড়িতে গিয়েছে, তখন তিনি ঘাবড়ে গিয়ে অলকাকে নির্জন জায়গায় ছেড়ে দিয়ে যায়।
পরবর্তীকালে ওই দম্পতি পুলিশের দ্বারস্থ হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, যে গাড়ি করে অপহরণ করা হয়েছিল, সেই গাড়িটি প্যাটেলের নামে রয়েছে। পুলিশ এটাও জানতে পারে যে মিতু প্যাটেল অম্বিকা-কলোল হাইওয়েতে তিরুপতি রেস্তোরাঁর মালিক। সন্দেহের বশে প্যাটেলকে আটক করে পুলিশ। জেরার মুখে প্যাটেল যাবতীয় দোষ স্বীকার করে নেয়। বাকি অভিযুক্তদের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। একজন রেস্তোরাঁ মালিকের রাতারাতি অপহরণকারী হয়ে যাওয়া পুলিশও হতবাক।