
নয়া দিল্লি: বাংলা তথা দেশজুড়ে বেড়েছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ। কেন্দ্রের চিন্তা বাড়িয়েছে এই অনুপ্রবেশকারীর সংখ্য়া। সেই জন্য দেশজুড়ে বাংলাদেশি চিহ্নিতকরণ এবং তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের এই পদক্ষেপকে সমর্থন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের। আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত বললেন, “দেশের সম্পদ ও কর্মসংস্থান কেবল বৈধ নাগরিকদের জন্য বরাদ্দ হওয়া উচিত।”
বৃহস্পতিবার, ২৮ অগস্ট একটি অনুষ্ঠানে মোহন ভাগবত বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনুপ্রবেশকারীর প্রসঙ্গ উঠে আসে। তখন তিনি বলেন, “দেশের সম্পদ ও কর্মসংস্থান কেবল বৈধ নাগরিকদের জন্য বরাদ্দ হওয়া উচিত। অনুপ্রবেশকারীদের জন্য নয়। রাষ্ট্র ও সমাজ টিকিয়ে রাখতে আইনশৃঙ্খলা এবং সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ জরুরি। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই অনুপ্রবেশের সমস্যা দেখা উচিত।”
তিনি বলেন, “আমাদের ডিএনএ হয়তো এক। ইউরোপেও বহু দেশের পূর্বপুরুষরা, কিন্তু দেশের সীমান্ত রয়েছে। আমি বলছি, যদি ডিএনএ এক হয়, তাহলে অনুমতি নিয়ে কেন আসছে না? যেখানে প্রবেশের অনুমতি মেলে না, সেখানে যাওয়া উচিত নয়। নিয়ম-কানুন সরিয়ে রেখে আপনি একটা দেশে ঢুকে পড়তে পারেন না। বেআইনিভাবে দেশে ঢুকলেই সমস্যা দেখা দেয়।”
অন্য দেশের নাগরিকদের কাজ না দেওয়ার পরামর্শও দেন আরএসএস প্রধান। বলেন, “আমাদের দেশের মানুষদের কাজ দেওয়া উচিত। আমাদের দেশেও মুসলিম রয়েছে, তাদেরও কাজের দরকার। যদি মুসলিমদের কাজ দিতে চান, তবে অন্য দেশের নাগরিকদের জন্য কেন করবেন? আইনি বৈধ পথে ভারতে এসে কর্মসংস্থান জোগাড় করলে কোনও সমস্যা নেই।”
আরএসএস এবং বিজেপির মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব আছে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে ভাগবতের স্পষ্ট জবাব, “মতভেদ থাকতে পারে, মনভেদ নেই। কোন ঝগড়া দ্বন্দ্ব নেই। আমরা আলোচনার মধ্যে দিয়ে সমষ্টিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে কাজ হয়।”
মোহন ভগবতের কথায়, “সরকার, দল, সবাই এই সংগ্রামের অংশ। কিন্তু সবাইকে যে সব সময় একই ভাবনা ভাবতে হবে এমনটা নয়। আসল উদ্দেশ্য লক্ষ্যভেদ।”
সম্প্রতিই পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে যেখানে ভাষা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, মাতৃভাষা রক্ষার ডাক দেওয়া হচ্ছে, সেখানেই এই ভাষা বিতর্ক নিয়ে মোহন ভাগবত বলেন, “ভারতের প্রতিটি ভাষাই জাতীয় ভাষা। কোনও একটি ভাষাকে আলাদাভাবে ‘জাতীয় ভাষা’ ঘোষণা করা উচিত নয়। প্রত্যেক ভাষার নিজস্ব মর্যাদা, সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে, যা সমানভাবে সম্মানিত হওয়া প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “প্রত্যেক নাগরিকের নিজ মাতৃভাষায় শিক্ষা ও যোগাযোগ করার অধিকার আছে। প্রাথমিক শিক্ষা অবশ্যই মাতৃভাষায় হওয়া উচিত। ভাষা নিয়ে অযথা বিরোধ বা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করা উচিত নয়।”