
নয়া দিল্লি: গুপ্তচর সংস্থার এজেন্টকে বিয়ে? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার আগেই নিজের পাঁচ বছরের সন্তান নিখোঁজ। শীর্ষ আদালতের দুয়ারে বাঙালি যুবক। ২০১৭ সালে রাশিয়ান বান্ধবীকে বিয়ে করেছিলেন হুগলির চন্দননগরের বাসিন্দা সৈকত বসু। রুশ যুবতীর নাম ভিক্টোরিয়া। পরিচয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। যুবকের দাবি, বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন, তাঁর স্ত্রী রাশিয়ার এক প্রাক্তন গুপ্তচরের মেয়ে। দীর্ঘদিনের অশান্তি ও মামলা-মোকদ্দমার পর এবার উধাও সেই ভিক্টোরিয়া। খোঁজ নেই শিশু সন্তানেরও।
টিসিএস-এ কর্মরত সৈকত বসু জানাচ্ছেন, অনলাইনে আলাপের পর বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে সরাসরি ভারতে হাজির হয়েছিলেন ভিক্টোরিয়া। এরপর নিজের পরিবার নিয়ে রাশিয়ায় গিয়ে ভিক্টোরিয়াকে বিয়ে করেন সৈকত। পরিবার নিয়ে ফিরে আসেন চন্দননগরে।
সৈকত বসুর বাবা সমীর বসু নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত অফিসার। ফলে, ভারতীয় সেনার ইস্টার্ন কমান্ডের সদর দফতরে যাওয়া-আসার সুযোগ ছিল তাঁর। বিয়ের পর থেকে বসু পরিবারে এসে একটাই আব্দার ছিল ভিক্টোরিয়ার। ফোর্ট উইলিয়ামে নিয়ে যেতে হবে তাঁকে। শ্বশুরকে রীতিমতো চাপ দিতে থাকেন ইস্টার্ন কমান্ডের অফিস ঘুরে দেখার জন্য। আর সেই সময় সৈকত জানতে পারেন, ভিক্টোরিয়ার বাবা রাশিয়ার গুপ্তচর সংস্থা ‘ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসেস’-এর অবসরপ্রাপ্ত অফিসার। এই তথ্য জানার পরই বেঁকে বসেন সৈকত এবং তাঁর বাবা। শুরু হয় পারিবারিক অশান্তি।
সৈকতের আরও দাবি, ভিক্টোরিয়া চেয়েছিলেন তাঁর সন্তানের রাশিয়ায় জন্ম হোক, সে রাশিয়ার নাগরিকত্ব পাক। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সেটা সম্ভব হয়নি। ভারতেই জন্ম হয় সন্তানের। অশান্তি চরমে পৌঁছনোর পর মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। সৈকতের অভিযোগ, রাশিয়ান দূতাবাসের সহযোগিতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে সন্তানের অধিকারের জন্য একটি হেবিয়াস কর্পাস মামলা করেন ভিক্টোরিয়া। কিন্তু সৈকতের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের রায় যায় ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে। শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয়, ওই সন্তানকে দিনের ২০ ঘণ্টা বাবার কাছে ও ৪ ঘণ্টা মায়ের কাছে রাখতে হবে। এভাবেই চলছিল। কিন্তু গত ৪ জুলাই এক অদ্ভুত ঘটনা চোখে পড়ে যায় সৈকতের।
ভিক্টোরিয়াকে ফলো করতে গিয়ে সৈকত দেখেন দিল্লির রাশিয়ান দূতাবাসে ঢুকছেন তাঁর স্ত্রী ভিক্টোরিয়া। এক আধিকারিকের সঙ্গে লাগেজ নিয়ে ঢুকতে দেখেন সৈকত। আর এরপর থেকেই সন্তান নিয়ে বেপাত্তা ভিক্টোরিয়া। এবার নতুন করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে সন্তানকে উদ্ধার করার চেষ্টা করছেন চন্দননগরের সৈকত। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে বিদেশ মন্ত্রক সন্তানের উদ্ধারে যাতে সহযোগিতা করে সেই আবেদন জানিয়েছেন তিনি।