
নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা করলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। গভীর শোক প্রকাশও করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। হামলায় ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় আনতেই হবে বলে বার্তা দিয়েছেন পুতিন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের এই বার্তা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। কারণ, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার তদন্তে রাশিয়া ও চিনকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে পাকিস্তান।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে পুতিনের ফোনে কথোপকথনের বিষয়টি জানিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ফোন করেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন তিনি। নিরীহ মানুষের প্রাণহানিতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতকে পূর্ণ সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। নৃশংস হামলায় জড়িত ও তাদের সাহায্যকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় তোলার উপর জোর দিয়েছেন তিনি।”
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা নিয়ে পুতিনের এই বার্তায় পাকিস্তানের উপর আরও চাপ বাড়ল বলে কূটনৈতিক মহল মনে করছে। দিন কয়েক আগেই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাওয়াজা আসিফ এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “এই সংকটের সময়ে রাশিয়া কিংবা চিন বা পশ্চিমের দেশগুলি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে পারে। তারা একটি তদন্তকারী টিম গঠন করতে পারে। তারা তদন্ত করে দেখতে পারে ভারত সত্য কথা বলছে কি না। আন্তর্জাতিক টিম খতিয়ে দেখুক।” পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফও আন্তর্জাতিক তদন্তের পক্ষে বলে জানান খাওয়াজা।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। বেছে বেছে হিন্দু পর্যটকদের উপর হামলা চালানো হয়। মৃত্যু হয় ২৬ জনের। দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF) নামে জঙ্গি সংগঠন হামলার দায় স্বীকার করে। পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন হল TRF। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কড়া পদক্ষেপ করেছে ভারত। হামলাকারী ও তাদের সাহায্যকারীরা ছাড়া পাবে না বলে হুঙ্কার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এবার মোদীর সুরে সুর মিলিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টও হামলায় সাহায্যকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় আনার কথা বললেন।
এদিন পুতিনকে রাশিয়ার ৮০ তম বিজয় দিবস উদযাপনের আগাম শুভেচ্ছাও জানান। আগামী ৯ মে মস্কোতে ওই বিজয় দিবস উদযাপন হবে। সেই উদযাপনে যোগ দিতে এই মূহূর্তে মস্কো যেতে পারছেন না প্রধানমন্ত্রী মোদী। পুতিনকে আগাম শুভেচ্ছা জানালেন তিনি। একইসঙ্গে চলতি বছরের শেষের দিকে ভারতে দুই দেশের বার্ষিক সম্মেলনে আসার জন্য পুতিনকে আমন্ত্রণ জানালেন মোদী। পুতিন সেই আমন্ত্রণ স্বীকার করেছেন বলে জানা গিয়েছে।