লখনউ: উপনির্বাচনে হার মানতে পারছেন না অখিলেশ যাদব (Akhilesh Yadav)। বাবা মুলায়ম সিং যাদবের কেন্দ্র মৈইনপুরীতে জয় পেলেও, উত্তর প্রদেশের রামপুর (Rampur) কেন্দ্র, যা আজম খানের গড় হিসাবেই পরিচিত, তাতে মুখ থুবড়ে পড়ার পড়েছে সমাজবাদী পার্টি (Samajwadi Party)। বিগত ২০ বছর ধরে নিজেদের দখলে থাকা আসনেই জিতে গিয়েছে বিজেপি। আর ভোটে হারের পরই নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে অভিযোগ তুললেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব। পুনঃর্নিবাচনের দাবিও জানালেন তিনি। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের (Election Commission of India) কাছে এই মর্মে দলের তরফে পিটিশন জমা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। একইসঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধেও ভোটে কারচুপির অভিযোগ করেছেন সপা প্রধান তথা উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার গুজরাট ও হিমাচল প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পাশাপাশি ওড়িশা, উত্তর প্রদেশ, বিহার সহ একাধিক রাজ্যে উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশও ছিল। উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন সপা প্রধান মুলায়ম সিং যাদবের মৃত্যুর পরই তার জেতা মৈইনপুরীর আসন ফাঁকা পড়েছিল। একইভাবে জেলবন্দি নেতা আজম খানও বিধায়ক পদ হারানোয় তাঁর কেন্দ্র রামপুরে উপনির্বাচন হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেই উপনির্বাচনের ফলাফলেই দেখা যায়, মৈইনপুরীতে মুলায়মের পুত্রবধূ ডিম্পল যাদব জয়ী হলেও, রামপুরে হেরে গিয়েছে সমাজবাদী পার্টি। এই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী আকাশ সাক্সেনা। তিনি সপা প্রার্থী আসিম রাজাকে ৩৩ হাজারেরও বেশি ভোটে পরাস্ত করেন।
এদিকে, নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরই ক্ষোভ উগরে দেন সপা প্রধান অখিলেশ যাদব। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “রামপুর বিধানসভা আসনে সঠিকভাবে নির্বাচন হয়নি। ভোটে কারচুপি থেকে শুরু করে সপা কর্মীদের মারধর, ভোট দিতে না দেওয়ার মতো একাধিক ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে বারংবার এই নিয়ে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। এবার রামপুর কেন্দ্রে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তাঁর দল পিটিশন জমা দিয়েছে।”
২০০২ সাল থেকে একটানা রামপুর কেন্দ্র ছিল সমাজবাদী পার্টির দখলে। এই কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক আজম খান ও তাঁর পরিবার ১৯৮০ সাল থেকেই একবার বাদে প্রতিটি নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। কিন্তু একটি মামলায় জেলবন্দি আজম খান বিধায়ক পদ খোয়ানোয় উপনির্বাচন হয় এই কেন্দ্রে। সেখানেই বিজেপির কাছে হেরে যায় সপা প্রার্থী। নির্বাচনে এই হারের প্রসঙ্গে সপা প্রধান অখিলেশ যাদব বলেন, “আমি খুবই দুঃখী। নির্বাচন কমিশনের কাছে বারবার অভিযোগ জানানো হলেও, তারা কোনও পদক্ষেপ করেননি। আমরা কার উপরে ভরসা করব যদি নির্বাচন কমিশনই এই বিষয়ে নজর না দেয়? প্রশাসন আমাদের সমর্থকদের অপমান করেছে। কয়েকজনকে মারধরও করা হয়েছে এবং ভোট দিতে দেওয়া হয়নি।”
মাত্র ৩০ শতাংশ ভোট পড়া এই কেন্দ্রে নির্বাচনের ফল নিয়ে সমাজবাদী পার্টির তরফে অভিযোগ করা হয়েছে যে ভোটগ্রহণের দিন পুলিশ-প্রশাসনই সপা সমর্থকদের ভোট দিতে দেননি। যদিও পুলিশ ও সরকারের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।