নয়া দিল্লি: ২০১৯ সালের শেষভাগে খোঁজ মিলেছিল করোনা ভাইরাসের (COVID-19)। তারপরের তিন বছর ধরে সংক্রমণের সঙ্গে ক্রমাগত লড়াই চালিয়ে গিয়েছে গোটা বিশ্ব। নতুন আরেকটি বছরে পা দিলেও কিছুতেই মুক্তি মিলছে না করোনা থেকে। একদিকে চিনের লাগামছাড়া সংক্রমণ যেমন আতঙ্ক বাড়িয়েছে, তেমনই এবার আমেরিকার সংক্রমণও ভয় ধরাচ্ছে। বর্তমানে আমেরিকায় ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ। বিশেষজ্ঞ-গবেষকদের মতে, করোনার সাব ভ্যারিয়েন্ট এক্সবিবি.১.৫ (XBB.1.5)-র কারণেই দ্রুত গতিতে এই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। আমেরিকার এই ‘ডমিনেন্ট’ ভ্যারিয়েন্টের (Dominant Variant) খোঁজ ইতিমধ্যেই আরও ২৮টি দেশে মিলেছে। অতি সংক্রামক এই ভ্যারিয়েন্টকে বিশেষজ্ঞরা নাম দিয়েছেন ‘ক্রাকেন ভ্য়ারিয়েন্ট’ (kraken variant)। কতটা ভয়ঙ্কর এই ভ্যারিয়েন্ট, জেনে নেওয়া যাক-
২০২২ সালেই প্রথমবার করোনার এই ভ্য়ারিয়েন্টের খোঁজ মেলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এক্সবিবি১.৫ হল ওমিক্রন এক্সবিবি সাবভ্যারিয়েন্টেরই একটি রূপ। বিএ২.৭৫ ও বিএ২.১০ ভ্যারিয়েন্টের মিলিত হয়ে এই নতুন সাব ভ্যারিয়েন্ট তৈরি হয়েছে। এক্সবিবি সাবভ্য়ারিয়েন্ট মূলত ভারত ও সিঙ্গাপুরে সংক্রমণ ছড়ালেও, এক্সবিবি১.৫-র দাপট সবথেকে বেশি দেখা গিয়েছে আমেরিকাতেই। গত অক্টোবর মাসেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে এই সাবভ্য়ারিয়েন্ট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
মার্কিন সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরের শুরুতে আমেরিকার মোট সক্রিয় সংক্রমণের মধ্যে মাত্র ১ শতাংশের জন্য দায়ী ছিল এই সাবভ্য়ারিয়েন্ট, সেটাই মাসের শেষে ডমিনেন্ট ভ্যারিয়েন্টে পরিণত হয়েছে। মোট সংক্রমণের ৪১ শতাংশ এক্সবিবি১.৫ ভ্যারিয়েন্টের কারণে হয়েছে। আমেরিকার উত্তর-পূর্ব অংশে ৭০ শতাংশ সংক্রমণের জন্যই দায়ী এই ভ্যারিয়েন্ট।
হু-র তরফে জানানো হয়েছে, এক্সবিবি১.৫ ভ্য়ারিয়েন্টই সবথেকে বেশি সংক্রামক কিনা, তা এখনও স্থির করা হয়নি। ২৯টি দেশে এই ভ্য়ারিয়েন্টের খোঁজ মিলেছে। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, শীতকালে এই সংক্রমণের হার আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা। আমেরিকায় এই ভ্যারিয়েন্ট সবথেকে বেশি সংক্রমণ ছড়ালেও বাকি দেশগুলিতে এখনও ভয়াবহ আকার ধারণ করেনি এই ভ্য়ারিয়েন্ট। ইংল্যান্ডে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে মোট সংক্রমণের ৪ শতাংশ এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছিলেন। কানাডাতেও হাতে গোনা কয়েকজনই এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এই সাবভ্যারিয়েন্ট অত্যন্ত শক্তিশালী। সহজেই সংক্রমণ ছড়াতে পারে এই ভ্যারিয়েন্ট। টিকার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও ফাঁকি দিতে সক্ষম এই ভ্যারিয়েন্ট, ফলে টিকা নেওয়ার পর এবং যারা আগে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদেরও পুনরায় সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে।