
মহিলা হোস্টেলের বাথরুমে লুকোনো ক্যামেরা, বার বার প্রতিবাদ সত্ত্বেও নড়েচড়ে বসেনি কতৃপক্ষ। সম্প্রতি সেই নিয়েই ছড়িয়েছে উত্তেজনা। হায়দরাবাদের উপকণ্ঠে রয়েছে সিএমআর কলেজ। সেই কলেজের হোস্টেলেও একই রকম একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। জানুয়ারি মাসের ২ তারিখ, মহিলা শিক্ষার্থীরা তাঁদের শৌচাগারে গোপন ক্যামেরা থাকার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়।
ছাত্রীদের অভিযোগ, হোস্টেলে কর্মরত কিছু পুরুষ কর্মী বাথরুমে ভিডিও রেকর্ড করছিলেন। শিক্ষার্থীরা প্রমাণ হিসেবে বাথরুমের ভেন্টিলেটরে হাতের ছাপ দেখায়। পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা কলেজ পরিদর্শন করেন। বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়। তাঁদের ফোনও বাজেয়াপ্ত করা হয়। তদন্ত শুরু করা হয়। যদিও এই ঘটনার দেড় মাস পরেও, অভিযুক্তদের পরিচয় জানা যায়নি।
গত বছরের মাঝামাঝি, ২৮ অগস্ট কৃষ্ণা জেলার গুডলাভাল্লেরু ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা তাঁদের হোস্টেলের বাথরুমে গোপন ক্যামেরা থাকার অভিযোগে প্রতিবাদ জানিয়েছিল। গোটা অন্ধ প্রদেশে এই ঘটনা আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। পুলিশ হোস্টেলটি পরিদর্শন করে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রতি দেয়। জনপ্রতিনিধিরাও বিবৃতি দিয়ে বলেন দোষীদের রেহাই দেওয়া হবে না। তবে বাস্তবে ঘটনার ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্তদের শনাক্ত করা যায়নি।
অনন্তপুর জেলার বুক্কারায়াসমুদ্রমে অবস্থিত সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে মহিলা হোস্টেলের বাথরুমে গোপনে ভিডিও তোলার ঘটনায় এবার আরও জোরদার প্রতিবাদ শুরু করেছে। ছাত্র-ছাত্রীরা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ঘটনা প্রথমবার নয়। উপাচার্যকে অতীতেও একই ধরণের ঘটনার কথা জানানো হলেও তিনি এই বিষয়ে কর্ণপাত করেননি বলে অভিযোগ ছাত্র-ছাত্রীদের।
শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ প্রকাশ্যে আসতেই জেলা কালেক্টর এবং এসপি ব্যক্তিগতভাবে একটি তদন্ত পরিচালনা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কর্মী এবং ছাত্রদের সঙ্গে কথাও বলেন তাঁরা। কালেক্টর জানান পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং একটি তদন্তের রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে। তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী, পুলিশ এবং রাজস্ব কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে।
আগে লজ এবং শপিং মলের ট্রায়াল রুমে এই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হত মহিলারা। কিন্তু এখন হোস্টেলের বাথরুমে ঢুকে গোপন ক্যামেরার লাগানোর ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে মহিলাদের সুরক্ষা এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার উপরেও। বাথরুমের পিছনে লুকিয়ে দুষ্কৃতিরা গোপনে ছাত্রীদের ব্যক্তিগত ছবি তুলছে, ভিডিয়ো করছে। ঘন ঘন এই ধরনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় শিক্ষার্থী থেকে অভিভাবক উদ্বিগ্ন সকলেই। পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে তার জন্য আশ্বস্ত করার সঙ্গে সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবিও জানানো হয়েছে।