বেঙ্গালুরু : করোনা পরিস্থিতির কারণে আদালতের বিচার প্রক্রিয়া চলছে হাইব্রিড মডেলে। অনেক মামলার শুনানিই চলছে অনলাইনে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে। আর তার মধ্যেই একেবারে অপ্রত্যাশিত এক ঘটনার সাক্ষী থাকল কর্নাটক হাই কোর্ট (Karnataka High Court)। ভিডিয়ো কনফারেন্সে শুনানি চলাকালীন অর্ধ নগ্ন অবস্থাতেই ক্যামেরার সামনে বসে পড়েন এক ব্যক্তি।
কর্নাটকের প্রাক্তন মন্ত্রী রমেশ জারকিহোলির নাম জড়িয়েছে এক যৌন কেলেঙ্কারির মামলায়। সেই মামলার তদন্ত করছে বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT)। ওই বিশেষ তদন্তকারী দলের আইনত তদন্ত করার কোনও এক্তিয়ার রয়েছে কি না, তা নিয়ে একগুচ্ছ আবেদন জমা পড়েছিল আদালতে। সেই আবেদনগুলিরই শুনানি চলছিল আজ কর্নাটক হাই কোর্টে। তখনই এমন কাণ্ড করে বসলেন ওই ব্যক্তি। তাঁর নাম শ্রীধর ভাট।
বর্ষীয়ান আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং নির্যাতিতার পক্ষে আদালতে সওয়াল করছিলেন। এই ভাবে অর্ধ নগ্ন অবস্থাত শুনানিতে হাজির হওয়ার কারণে, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান।
শুনানির সময় তিনি আদালতে বলেন যে “এক ব্যক্তি স্যান্ডো গেঞ্জি ছাড়াই ভিডিয়ো কনফারেন্সে উপস্থিত হচ্ছেন। তাঁকে আদালত কক্ষের সবাই দেখতে পাচ্ছেন। দয়া করে এটির বিচার বিভাগীয় নোটিস নিন। আদালতে কিছু শালীনতা থাকুক। আমি একজন মহিলা আইনজীবী।”
তিনি আদালতকে অনুরোধ করেন, “একজন মহিলার পক্ষে আদালতের কক্ষে পোশাক ছাড়া একজন পুরুষকে দেখা খুবই আপত্তিকর। একজন মহিলা যখন আদালতে বলছেন তখন পোশাক ছাড়া একজন পুরুষ বসে আছে? কী হচ্ছে এ সব?”
তিনি আরও বলেন, “মনে হচ্ছে, তিনি আদালতের সামনে এবং আমার সামনে স্নান করছেন। এটা কীভাবে সম্ভব?”
আদালত ওই ব্যক্তির পরিচয় জানতে চায়, “তিনি কে? তিনি কি একজন আইনজীবী?” সঙ্গে আদালত এটিও পর্যবেক্ষণ করে, “আমরা তাঁকে দেখতে পাচ্ছি না।” ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানিতে থাকা অন্য একজন আইনজীবীও আদালতকে নিশ্চিত করেছেন, জয়সিং যা বলছেন তা সত্য। তিনিও পোশাক ছাড়াই লোকটিকে দেখতে পাচ্ছেন।
জয়সিং তখন উত্তর দেন, “আমি জানি না তিনি কে। তবে হাইকোর্টে কথা বলার সময় একজন নগ্ন ব্যক্তিকে আদালতে দেখাটা খুবই আপত্তিকর। আমি আমার দাবি জানাচ্ছি এবং আমি যা দেখতে পাচ্ছি তা একজন নগ্ন মানুষ। কোনও হাইব্রিড শুনানির সময় এরকম কিছু যা দেখছি, যা আমি আগে কখনও দেখিনি।”
শুনানি চলাকালীন আদালতের এক আধিকারিক ওই ব্যক্তি ফোন করার চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি। শুনানি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জয়সিং সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আদালতকে অনুরোধ করেন। এরপরই আদালত ওই ব্যক্তিকে নোটিস পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন: ‘বরখাস্ত হওয়ার পরও সাংসদদের কোনও অনুতাপ নেই’, সাজা প্রত্যাহারে ‘না’ নাইডুর