
নয়াদিল্লি: কয়েকদিন আগে পর্যন্ত তাঁকে একজন চিকিৎসক হিসেবেই চিনতেন সবাই। কিন্তু, তার আড়ালে শাহিন শাহিদ যে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে যুক্ত, তা কেউ ঘুণাক্ষরে বুঝতে পারেননি। তবে শাহিনের আচরণ যে অদ্ভুত ছিল, তা বলছেন আল ফলাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক। শাহিনকে পুলিশ গ্রেফতার করার পর তাঁর সম্পর্কে একাধিক তথ্য সামনে আসছে। ওই অধ্যাপক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মকানুনের কোনও পরোয়া করতেন না শাহিন। সন্দেহভাজনদের সঙ্গে তাঁর ওঠাবসা ছিল।
শাহিনের বাড়ি উত্তর প্রদেশের লখনউয়ে। হরিয়ানার আল ফলাহ বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করতেন বছর ছেচল্লিশের শাহিন। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী তিনি। চিকিৎসা করার আড়ালে ভারতে জইশ-ই-মহম্মদের মহিলা শাখাকে যে তিনি নেতৃত্ব দিতেন, তা জানা ছিল না কারও। জইশ-ই-মহম্মদের মহিলা শাখা জামাত-উল-মোমিনাতের প্রধান হল মাসুদ আজহারের বোন সাদিয়া আজহার। আর জামাত-উল-মোমিনাতের ভারতীয় শাখার দায়িত্বে ছিলেন শাহিন।
সেই শাহিন ধরা পড়ার পর আল ফলাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই অধ্যাপক বলেন, শাহিনের আচরণ অদ্ভুত হলেও তাঁরা কখনও ভাবেননি যে তিনি জঙ্গি কার্যকলাপে যুক্ত থাকতে পারেন। শাহিনের সম্পর্কে ওই অধ্যাপক বলেন, “কাউকে কিছু না জানিয়ে যখন তখন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যেতেন শাহিন। অনেকেই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসতেন। তাঁর আচরণ অদ্ভুত ছিল। ম্যানেজমেন্টের কাছেও তাঁর সম্পর্কে নানা অভিযোগ জমা পড়েছে।” শাহিন অতীতে কী করতেন, আগে কোথায় কাজ করতেন, বারবার জানতে চেয়েও কোনও তথ্য মেলেনি।
এখন শাহিন সম্পর্কে জানতে পেরে অবাক হয়ে যাচ্ছেন আল ফলাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা। ওই অধ্যাপক জানান, তাঁর এনআইএ-কে তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। এদিকে, জানা গিয়েছে, প্রথম স্বামীর সঙ্গে ২০১৫ সালে ডিভোর্স হয়ে যায় শাহিনের। জঙ্গি নেটওয়ার্কের সঙ্গে যোগসূত্রের অভিযোগে ধৃত চিকিৎসক মুজাম্মিল শাকিলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল শাহিনের। ধৃত এই মহিলা চিকিৎসকের সম্পর্কে আর কী কী বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসে, সেটাই এখন দেখার।