Indrani Mukerjea: প্রায় ৭ বছর জেলের অন্ধকারে, শিনা বোরা হত্যাকাণ্ডে অবশেষে মুক্তি ইন্দ্রানীর

Indrani Mukerjea: শুক্রবার, শিনা বোরা হত্যা মামলায় মুক্তি পেলেন ইন্দ্রানী মুখোপাধ্য়ায়।

Indrani Mukerjea: প্রায় ৭ বছর জেলের অন্ধকারে, শিনা বোরা হত্যাকাণ্ডে অবশেষে মুক্তি ইন্দ্রানীর
বাইকুল্লা কারাগার থেকে সাড়ে ছয় বছর পর মুক্তি পেলেন ইন্দ্রানী (ছবি সৌজন্য: এএনআই )

| Edited By: অমর্ত্য লাহিড়ী

May 20, 2022 | 7:04 PM

মুম্বই: অবশেষে জেলের বাইরে ইন্দ্রানী মুখোপাধ্য়ায়। শিনা বোরা হত্যা মামলায় গত বুধবারই তাকে জামিন দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার, নথিপত্র সংক্রান্ত জটিলতার জেরে ছাড়া পাননি তিনি। অবশেষে, শুক্রবার প্রায় ৭ বছর পর মুম্বইয়ের বাইকুল্লা মহিলা সংশোধনাগার থেকে জামিনে ছাড়া হয় তাকে। তাকে জামিনের অনুমতি দেওয়ার সময় আদালত বলেছিল, ইন্দ্রানী ইতিমধ্যেই সাড়ে ছয় বছর ধরে হেফাজতে আছেন। বিচার প্রক্রিয়াও খুব তাড়াতাড়ি শেষ হবে না। এই মামলার অন্য অভিযুক্ত, পিটার মুখোপাধ্যায়ও ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জামিন দেওয়া হয়েছে। এই সকল কারণেই ইন্দ্রানীকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হল। পিটার মুখোপাধ্যায়কে যে যে শর্তে জামিন দেওয়া হয়েছিল, ইন্দ্রানীর ক্ষেত্রেও সেই শর্তগুলিই দেওয়া হয়েছে। ২০১৫ সালের অগাস্টে, ইন্দ্রানী মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিল মুম্বই পুলিশ।

গত প্রায় ৭ বছর ধরে মুম্বইয়ের বাইকুল্লা মহিলা সংশোধনাগারই ছিল ইন্দ্রানীর ঠিকানা। এদিন সেখান থেকে বের হওয়ার সময়ে হাসি মুখেই বের হতে দেখা গিয়েছে ইন্দ্রানী মুখোপাধ্য়ায়কে। তাঁর পরণে ছিল সাদা সালোয়ার-কামিজ। জামিনে মুক্তির পর, সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে ইন্দ্রানী জানিয়েছেন, ‘আমি খুবই খুশি। আমি শুধু বাড়ি যেতে চাই, (মনে রয়েছে) সহানুভূতি এবং ক্ষমা। যারা আমায় আঘাত করেছে, তাদের সকলকে আমি ক্ষমা করে দিয়েছি। কারাগারে আমি অনেক কিছু শিখেছি।’

কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও, দেশ ছাড়তে পারবেন না ইন্দ্রানী। তাঁর আইনজীবী সানা রইস শেখ জানিয়েছেন, ‘বিশেষ এনআইএ আদালতে তাঁকে পাসপোর্ট জমা রাখতে হয়েছে। বিচারক জানিয়ে দিয়েছেন, আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি ভারতের বাইরে যেতে পারবেন না। আদালত ইন্দ্রানী মুখোপাধ্যায়কে এই মামলার কোনও সাক্ষীর সঙ্গে যোগাযোগ করতেও নিষেধ করেছে। তাঁকে প্রত্যেকটি শুনানিতে হাজিরা দিতে হবে এবং তিনি এই মামলায় কোনও স্থগিতাদেশের আবেদনও করতে পারবেন না। এই শর্তগুলি না মানলে, তাঁর জামিনের আদেশ বাতিল করার আবেদন করতে পারবে প্রশাসন।

গত বুধবার, বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও, বিআর গাভাই এবং এএস বোপান্নার বেঞ্চ, বলেছিল, ‘ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্য়ায় সাড়ে ছয় বছর ধরে হেফাজতে রয়েছেন। এই মামলাটি আনুষঙ্গিক প্রমাণের উপর ভিত্তি করে। আমরা মামলার যোগ্যতা নিয়ে মন্তব্য করছি না। এমনকি ৫০ শতাংশ সাক্ষীকে ছেড়ে দিলেও, বিচার শীঘ্র শেষ হবে না। ওঁকে জামিন দেওয়া হয়েছে। ট্রায়াল কোর্টের সন্তুষ্টি সাপেক্ষে তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হবে। পিটার মুখোপাধ্য়ায়ের উপর যে শর্ত আরোপ করা হয়েছিল তাঁর উপরও আরোপ করা হবে।’

২০১৫ সালের অগাস্টে, ইন্দ্রানী মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিল মুম্বই পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছিল ইন্দ্রানীর গাড়ির চালক শ্যামবর পিন্টুরাম রাই এবং তাঁর দ্বিতীায় স্বামী সঞঅজীব খান্নাকেও। তাঁদের বিরুদ্ধে শিনা বোরাকে অপহরণ, হত্যা এবং তাঁর দেহ পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ আনা হয়েছিল। ইন্দ্রানী অবশ্য দাবি করেছিলেন, শিনা বোরা জীবিত এবং তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। পরে, এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ইন্দ্রানীর তৃতীয় স্বামী তথা মিডিয়া টাইকুন পিটার মুখোপাধ্যায়কেও।

শিনা বোরা ছিলেন ইন্দ্রানীর প্রথম পক্ষের স্বামী সিদ্ধার্থ দাসের মেয়ে। জানা যায়, তার সঙ্গে পিটার মুখোপাধ্যায়ের প্রথম পক্ষের পুত্র রাহুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। অভিযোগ, পিটার এবং রাহুল দুজনের কাছেই শিনাকে নিজের বোন বলে পরিচয় দিয়েছিলেন ইন্দ্রানী। তদন্তকারীদের দাবি, রাহুল ও শিনার সম্পর্ক মেনে নিতে না পারার কারণেই, নিজের কন্যাকে হত্যা করেছিলেন ইন্দ্রানী।