এবার কি হিন্দু ভোটে কোপ! ‘জয় বাংলা’ ডাক দিয়ে সেনার বঙ্গে পা

উগ্র বনাম নরম হিন্দুত্বের লড়াই এবার পশ্চিমবঙ্গে। এদিন শিবসেনার সাংসদ সঞ্জয় রাউত সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়ে দিয়েছেন, আসন্ন বাংলা বিধানসভা নির্বাচনে তাঁদের দলও প্রার্থী দেবে।

এবার কি হিন্দু ভোটে কোপ! 'জয় বাংলা' ডাক দিয়ে সেনার বঙ্গে পা
অলংকরণ-অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Updated on: Jan 17, 2021 | 8:28 PM

মুম্বই: এতদিন ৩০ শতাংশ নিয়ে চলছিল কাটাকাটি, এবার কি বাকি ৭০-এ কোপ পড়তে চলেছে? এবার কি উগ্র বনাম নরম হিন্দুত্বের লড়াই দেখতে চলেছে বাংলা? এই সব প্রশ্নের উত্তর মিলল শিবসেনা (Shiv Sena) সাংসদ সঞ্জয় রাউতের টুইটে। (Sajay Raut)  আসন্ন বাংলা বিধানসভা নির্বাচনে (West Bengal Election 2021) শিবসেনাও প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শিবসেনার সেকেন্ড ইন কম্যান্ড এদিন সন্ধ্যেয় একটি টুইটে লেখেন, “বহু প্রতীক্ষিত খবরটা দিচ্ছি। দলের সুপ্রিমো উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে আলোচনা করার পর শিবসেনা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে লড়বে। আমরা শীঘ্রই কলকাতা আসছি।জয় হিন্দ, জয় বাংলা।”

মহারাষ্ট্রের শাসকদের জোটশক্তি এই নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা বাংলা বিধানসভা ভোটকে কার্যত আরও রোমাঞ্চকর করে তুলল। শিবসেনা নেতার ‘জয় বাংলা’ ডাক অবশ্য পর্যবেক্ষকদের নজর কেড়েছে। তবে এর পিছনে সুক্ষ্মভাবে শরদ পাওয়ারের পরোক্ষ প্রভাব থাকতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। কেননা, এনসিপিও মহারাষ্ট্রের মহা আগাড়ি জোটের অন্যতম শরিক। এবং বিরোধী শিবিরের মধ্যে অন্যতম গ্রহণযোগ্য মুখ তিনি। বাংলায় বিজেপিকে ঠেকাতে তাঁর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক সময়ে টিপসও নিয়ে থাকেন বলে শোনা যায়। এবং মহারাষ্ট্র সরকারের অন্যতম চালকশক্তি তিনিই।শিবসেনা পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটে লড়লে যে হিন্দু ভোটের একটা অংশ তাঁদের দিকে যাবে, এ কথা চোখ বন্ধ করেই বলা যায়। এর ফলে হিন্দু ভোটের একক দাবিদার আর বিজেপি রইবে না।

আব্বাস সিদ্দিকি ও মিম যেভাবে সংখ্যালঘু ভোটে ভাগ বসানোর সবরকম প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে, তাতে মুখে কেউ স্বীকার না করলেও বেশ কিছুটা চিন্তায় রয়েছে এ রাজ্যের শাসকদল। সেই চিন্তা দূর করতেই সর্বভারতীয় রাজনীতির অধুনা ‘চাণক্য’ শরদ পাওয়ারের অঙ্গুলি হেলনেই শিবসেনা এই পদক্ষেপ করে থাকতে পারে বলে মত পর্যবেক্ষদের। এর ফলে বিজেপির হিন্দু ভোটব্যাঙ্কে সামান্যতম আঘাত হানা গেলেও তা আখেরে তৃণমূলের জন্যই লাভজনক হতে পারে।

বাংলা ভোটে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির আগমন ও পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির ভোট যুদ্ধে নামার লাভের গুড় যে বিজেপি খাবে, সেটা কোনও রাখঢাক না রেখেই স্বীকার করেছে বিজেপি। বিহার ভোটের পর থেকেই ওয়েইসির মিমকে বিজেপির বি-টিম বলে হচ্ছে বিরোধীদের পক্ষ থেকে। আসন না পেয়েও ভোট কাটার অঙ্ক কতটা নির্ণায়ক হয়ে উঠতে পারে, তা চোখে আঙুল দিয়ে বিহার বিধানসভা নির্বাচন দেখিয়ে দিয়েছে। মিম ও চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি মিলে হারের খাদ থেকে টেনে তুলেছে এনডিএ-কে। তাই বাংলা ভোটেও ভোট ভাগাভাগির সমীকরণ বড় ভূমিকা নিতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে শিবসেনার এই সিদ্ধান্তের পিছনে তৃণমূল সুপ্রিমোর ক্ষুরধার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা থাকতে পারে, এমন সম্ভাবনাও কেউ উড়িয়ে দিচ্ছেন না।