নয়া দিল্লি: তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসছে শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডে। চলতি সপ্তাহেই অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালার পলিগ্রাফ ও নারকো অ্যানালাইসিস পরীক্ষা করা হয়। সেই পরীক্ষায় আফতাব স্বীকার করে নিয়েছিল যে শ্রদ্ধাকে সেই-ই খুন করেছে। তাঁর মুখে অনুতাপের লেশমাত্র ছিল না। প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়াকারকে খুন করতে যে সাতটি অস্ত্র ব্যবহার করেছিলেন আফতাব, তা কোথায় ফেলেছিলেন, তদন্তকারীদের তা জানান আফতাব। অন্যদিকে, এই কথাও স্বীকার করে নেন যে রাগ ও ক্ষোভের বশেই শ্রদ্ধাকে খুন করেছিলেন। শ্রদ্ধার মোবাইল ও কাপড় কোথায় ফেলেছেন, তাও জানান। এবার জানা গেল, কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করেছিলেন আফতাব। পুলিশ সূত্রে খবর, শ্রদ্ধার দেহ টুকরো করতে আফতাব চাইনিজ ছুরি ব্যবহার করেছিলেন। আফতাবের মেহরৌলির ফ্ল্যাট থেকে ওই ছুরি উদ্ধার হয়েছে।
সূত্রের খবর, গত ১৮ মে শ্রদ্ধাকে গলা টিপে খুন করার পর আফতাব প্রথমে তাঁর হাত কাটে। এরপর দেহের বাকি অংশগুলি কেটে টুকরো টুকরো করে। নারকো পরীক্ষাতেও আফতাব স্বীকার করে নিয়েছে অপরাধের কথা। কী কী অস্ত্র ব্যবহার করে শ্রদ্ধার দেহ টুকরো করেছিলেন, তাও তদন্তকারীদের জানিয়েছেন আফতাব। খুনের পর আফতাব সেই ধারাল অস্ত্রগুলি বিভিন্ন জায়গায় ফেলে এসেছিলেন। বর্তমানে পুলিশ আফতাবের বয়ান অনুযায়ীই সেই অস্ত্রগুলির খোঁজ করছে।
গত বৃহস্পতিবারই দিল্লির রোহিনীর একটি সরকারি হাসপাতালে আফতাব আমিন পুনাওয়ালার নারকো অ্যানালাইসিস পরীক্ষা করা হয়। সেখানেই আফতাব জানায়, মোট সাতটি অস্ত্র ব্যবহার করেছিলেন শ্রদ্ধার দেহ টুকরো করতে। বাথরুমে নিয়ে গিয়ে তিনি শ্রদ্ধার দেহের ৩৫ টুকরো করেন। মাঝে তিনি যখনই ক্লান্ত বোধ করছিলেন, সেই সময় তিনি বিয়ার, সিগারেট খেয়েছিলেন। অনলাইনে খাবার অর্ডার করে খেয়েছিলেন, নেটফ্লিক্সে শোও দেখেছিলেন।
লিভ ইন সঙ্গী শ্রদ্ধাকে খুন ও তাঁর দেহের ৩৫ টুকরো করার পরের দিন আফতাব মেহরৌলির একটি দোকান থেকেই ৩০০ লিটারের ফ্রিজ কিনেছিলেন। সেই ফ্রিজের ভিতরেই জমিয়ে রাখতেন শ্রদ্ধার দেহ। প্রত্যেকদিন রাতে সেই দেহের টুকরোগুলি নিয়ে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ফেলে আসতেন তিনি।
বর্তমানে পুলিশ অস্ত্রগুলির পাশাপাশি সেই দোকানেরও খোঁজ করছেন, যেখান থেকে আফতাব অস্ত্রগুলি কিনেছিলেন। ১৮ মে, শ্রদ্ধাকে খুনের আগেই এই অস্ত্রগুলি কেনা হয়েছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।