নয়া দিল্লি: রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতে নয়া মোড়। বাজেট অধিবেশন শেষের পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সাংসদ সৌগত রায়। স্পষ্টই জানান, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে দ্রুত অপসারণ করুন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু, হালকা চালেই উত্তর নমোর, এমনটাই জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ (Sougata Roy)।
সৌগত রায় বলেন, “বাজেট অধিবেশনের পর আমরা সাক্ষাৎ করেছিলাম। প্রধানমন্ত্রী তখন সকলের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে কথা বলছিলেন। সেইসময়ে আমি দেখা করে বলি, আমরা এই রাজ্যপালকে চাই না। তাঁকে অপসারণ করা হোক। তাতে প্রধানমন্ত্রী অল্প হাসেন, বলেন, ‘আপনি অবসর নিলেই রাজ্যপালকে অপসারণ করতে পারব। তার আগে নয়।’ অর্থাৎ, কথাটা হালকা চালে ঘুরিয়ে দিলেন। বলা যায় হেসে উড়িয়ে দিলেন।” তাহলে, কি তৃণমূল সাংসদ অবসর নিলে তাঁকেই রাজ্যপাল নিয়োগ করা হতে পারে? সে প্রশ্নের উত্তরে যদিও সৌগত হালকা হেসে বলেন, “না, তেমন তো বলা যায় না। পক্ষান্তরে কথাটা হয়ত তাই, তবে অমন কথা ধরা যায় না।”
এদিকে, সৌগতর এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে পাল্টা মুখ খুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বলেছেন, “আসলে, তৃণমূলের যাঁরা বরিষ্ঠ সাংসদ রয়েছেন তাঁরা জানেন যে যা করা হচ্ছে তা ভুল। মাননীয়া যে টুইটারে রাজ্যপালকে ব্লক করেছেন, তা যে সঠিক কাজ নয়, সেটা তাঁরাও বোঝেন। কিন্তু, কর্তার ইচ্ছায় কর্ম। ফলে, তাঁরা বাধ্য! যা বলা হচ্ছে তাই করছেন। এটা তো কোনওভাবে কাম্য নয়। যেখানে পাবেন, সেখানে গিয়ে এই রাজ্যপালকে অপসারণের কথা বলতে থাকবেন।”
বস্তুত, সোমবার নবান্নের সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন তিনি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে টুইটারে ব্লক করেছেন। তিনি একা নন, পরবর্তীতে, বিধায়ক মদন মিত্র, সাংসদ ডেরেক ও’ ব্রায়েনও টুইটারে রাজ্যপালকে ব্লক করে দেন।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপের পরেই টুইট করেন রাজ্যপাল। তাতে লেখেন, “রাজ্যের বিভিন্ন প্রশাসনিক বিষয়ে রাজ্যপালকে জানানো মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।” কেন রাজ্য সরকার দু’ বছর ধরে কোনও তথ্য রাজ্যপালকে জানাচ্ছে না, তাও টুইটারে জানতে চান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। পরে যদিও আরও একটি টুইট করেন রাজ্যপাল। সেখানে তিনি বলেছেন, “সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে আলোচনা এবং সম্প্রীতিই গণতন্ত্রকে তুলে ধরে এবং সেই সঙ্গে সংবিধানের গুরুত্বকেও তুলে ধরে। এটি পারস্পরিক সম্মান এবং শ্রদ্ধার মাধ্যমে হবে।” বস্তুত, বর্তমানে রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত যে না থেমে আরও বাড়বে এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।