শ্রীনগর : জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপ আগের থেকে অনেকটা কমেছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছে জঙ্গি কার্যকলাপ। কিন্তু এরই মধ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে শ্রীনগর। সংবাদসংস্থা আইএএনএস সূত্রে খবর, জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠছে শ্রীনগর। আর এটাই এখন কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলছে সেনা আধিকারিকদের।
সেনা সূত্রে খবর, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত উপত্যকায় ৭৫ টি জঙ্গি কার্যকলাপের খবর পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে ১৬ টিই শ্রীনগরে, যা উপত্যকায় মোট জঙ্গি কার্যকলাপের প্রায় ২১ শতাংশ। এর আগে ২০১৯ সালে পরিসংখ্যানটি ছিল ৬ শতাংশ এবং ২০২০ সালে ছিল ৫ শতাংশ। এতদিন পর্যন্ত জঙ্গিদের পছন্দের জায়গা ছিল পুলওয়ামা, অনন্তনাগ কিংবা শোপিয়ানের মতো জায়গায়গুলি। বিগত বছরগুলিতে মাঝে মধ্যেই এইসব জায়গা থেকে জঙ্গি কার্যকলাপের খবর পাওযা যেত। কিন্তু এখন জঙ্গিদের নতুন ডেরা হয়ে উঠছে শ্রীনগর।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, সম্প্রতি কাশ্মীরে জঙ্গি দমনে নিযুক্ত সিআরপিএফ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলির অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে এমন তথ্য উঠে এসেছে। রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, জঙ্গিদের নতুন পছন্দের জায়গা হিসেবে উঠে আসছে শ্রীনগর। বিশেষ করে টিআরএফের জঙ্গিরা এখানে ভীষণভাবে সক্রিয় হয়ে উঠছে। চলতি বছরে নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর জওয়ানরাও সবথেকে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন শ্রীনগরেই। জওয়ানদের উপর মোট ১৫ টি হামলার মধ্যে ৮টিই শ্রীনগরে।
শুধু তাই নয়, সাম্প্রতিককালে সবথেকে বেশি আইইডি বিস্ফোরকও উদ্ধার হয়েছে শ্রীনগর থেকে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, অন্তত ৮-১০ জন জঙ্গি শ্রীনগর জেলায় সক্রিয় রয়েছে।
প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার শাখা সংগঠন টিআরএফ সম্প্রতি তাদের সংগঠন বাড়ানোর কারণেই শ্রীনগরে জঙ্গি কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়ে থাকতে পারে। টিআরএফের কমান্ডার আব্বাস শেখের খোঁজ চালাচ্ছিল জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। সূত্রের খবর, বেশ কয়েকবার শ্রীনগরে তার দেখা পাওয়া গিয়েছিল। সম্প্রতি ২৩ অগস্ট আলুচি বাগ এলাকায় এক সেনা অভিযানে টিআরএফ প্রধানকে নিকেশ করা হয়েছে বলে সেনা সূত্রে খবর। খতম করা হয়েছে তার সহযোগী সাকিব মঞ্জুরকেও।
সেনা সূত্রে খবর, আব্বাস শেখ এবং তার সহযোগী উপত্যকায় একাধিক জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত ছিল। এই দুই জঙ্গি নেতা উপত্যকার তরুণদের জঙ্গি সংগঠন টিআরএফে নিয়োগ করছিল বলেও শোনা যায়। ২০০৬ সাল থেকে আব্বাসের খোঁজ চালাচ্ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের আধিকারিকরা।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের কাশ্মীর জ়োনের আইজি বিজয় কুমার ২৩ অগস্ট আব্বাস শেখের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। ১০ জন জওয়ান সাদা পোশাকে গোটা এলাকাটি ঘিরে ফেলেছিলেন। এরপর জঙ্গিরা গুলি চালাতে শুরু করে। দুই পক্ষের গুলির লড়াইয়ে নিকেশ হয় আব্বাস শেখ ও তার সহযোগী।
আরও পড়ুন : বিশ্লেষণ: ফের কি গৃহযুদ্ধ আফগানিস্তানে? জঙ্গি তালিবানের নয়া শত্রু ‘আইসিস-কে’, কেন উদ্বেগে নয়া দিল্লি?