নয়া দিল্লি: একের পর এক রাজ্য অভিযোগ জানাচ্ছে কয়লা ও বিদ্যুৎ সঙ্কটের (Coal and Power Crisis)। এরই মাঝে মঙ্গলবার সরকারি সূত্রে জানানো হল, একাধিক রাজ্যের তরফে কোল ইন্ডিয়া(Coal India)-কে বকেয়া অর্থ মেটানো হয়নি। বকেয়া অর্থের পরিমাণটাও সামান্য় নয়, প্রায় ২০ হাজার কোটি !
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়লা মন্ত্রকের (Coal Ministry) তরফে রাজ্যগুলিকে জানুয়ারি মাস থেকেই কোল ইন্ডিয়ার কাছ থেকে মজুত কয়লা সংগ্রহ করার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু রাজ্যের তরফেই কোনও জবাব মেলেনি। সূত্রের দাবি, কেন্দ্রের তরফে বারংবার নির্দেশ দেওয়া হলেও রাজ্যগুলি একদিকে যেমন পর্যাপ্ত পরিমাণ কয়লা উত্তোলন করছে না, একইসঙ্গে কোল ইন্ডিয়ার কাছে তাদের জন্য় যে বরাদ্দ কয়লা মজুত করে রাখা রয়েছে, তাও সংগ্রহ করা হচ্ছে না। দিল্লি, পঞ্জাবের মতো রাজ্যে প্রধান কয়লা উৎপাদন প্ল্যান্টও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এরফলেই এই সঙ্কটময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, কোল ইন্ডিয়া একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অবধিই কয়লা মজুত রাখতে পারে, কারণ অতিরিক্ত পরিমাণ কয়লা মজুত থাকলে সেখান থেকে আগুনও লাগতে পারে। ঝাড়খণ্ড (Jharkhand), রাজস্থান (Rajasthan) ও পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) নিজস্ব কয়লাখনি থাকলেও সেখানে অতি স্বল্প পরিমাণেই কয়লা উৎপাদন করা হয়। বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর জন্য একটি বড় অংশই সম্পূর্ণভাবে কেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল।
একইসঙ্গে বর্ষার মরশুমের কারণে কয়লা উত্তোলনের পরিমাণও কমেছে এবং বিদেশ থেকে আমদানি করা কয়লার দামও বেড়েছে। এই সমস্ত কারণ মিলিয়েই বর্তমানে একাধিক রাজ্যেব কয়লা সঙ্কট দেখা দিয়েছে, যার জেরে বিদ্যুৎ পরিষেবাও ব্যহত হচ্ছে। যখন আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দাম কম ছিল, তখন রাজ্য ও বেসরতারি বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থাগুলি সরাসরি বিদেশ থেকেই কয়লা আমদানি করছিল। বর্তমানে বিদেশী কয়লার দাম বাড়তেই তারা দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত কয়লার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। হঠাৎ চাহিদা বৃদ্ধির কারণেও এই সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
এদিকে, সরকারের তরফে জানানো হয়েছে কোল ইন্ডিয়ার বিপুল পরিমাণ অর্থ বকেয়া থাকলেও এখনও কোনও রাজ্যে সরবরাহ বন্ধ করা হয়নি। আপাতত সঙ্কট মেটাতে দৈনিক কয়লার উৎপাদন ১.৯৪ মিলিয়ন টন থেকে বাড়িয়ে ২ মিলিয়ন টন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। রাজ্যগুলির তরফে কেন্দ্রের কাছে যে আবেদন পাঠানো হচ্ছে, তাও বিবেচনা করে পূরণ করা হচ্ছে।
এদিকে সেন্ট্রাল কোলফিল্ড লিমিটেডের তরফে গতকাল জানানো হয়েছিল, যেমন সঙ্কটের কথা বলা হচ্ছে, আসলে তেমন কিছুই নয়। কয়লার মজুত এবার কিছুটা কম রয়েছে। তবে তাতে সঙ্কটের কোনও পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এই বছর অনেক বেশি পরিমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। সেই কারণেই কম পরিমাণে কয়লা মজুত রয়েছে।
আরও পড়ুন: Delhi: বুলেট ট্রেন থেকে হেলিট্যাক্সি, ২০ বছরেই ভোল বদলাবে রাজধানী, সম্মতি খসড়া পরিকল্পনায়