ওয়াশিংটন: ভারতে করোনা টিকাকরণে দুই ডোজ়ের মধ্যে ব্যবধান বাড়াতেই অনেকে টিকার কার্যকারিতার যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, কিন্তু ভারতের দেখানো পথেই এ বার হাঁটতে চলেছে বাকি দেশগুলিও। কারণ বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় উঠে আসছে একই তথ্য- দুই ডোজ়ের মধ্যে ব্যবধান বাড়ালে টিকার কার্যক্ষমতা প্রায় ৩০০ শতাংশ অবধি বৃদ্ধি পেতে পারে।
টিকা উৎপাদনে ঘাটতির মাঝেই দেশের প্রতিটি মানুষের টিকাকরণ যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং বিষয়। তবে দুই ডোজ়ের মধ্যে ব্যবধান বাড়ালে একদিকে যেমন দ্বিতীয় ডোজ়ের জোগানে সুবিধা হয়, তারই পাশাপাশি ভাইরাসের বিরুদ্ধে দেহের অ্যান্টিবডির লড়ার ক্ষমতাও ২০ থেকে ৩০০ গুণ বেড়ে যায়, যদি প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ়ের মধ্যে ব্যবধান থাকে।
ইতিমধ্যেই সিঙ্গাপুরেও এই পন্থাই অবলম্বন করা হচ্ছে। সেখানে করোনা টিকার দুটি ডোজ়ের মধ্যে তিন থেকে চার সপ্তাহের ব্যবধানকে বাড়িয়ে ছয় থেকে আট সপ্তাহ করা হচ্ছে। এরফলে একদিকে যেমন টিকাপ্রাপকদের দেহে প্রথম ডোজ় বেশিদিন নিজের কার্যক্ষমতা প্রকাশ করার সুযোগ পাবে, পাশাপাশি আগামী অগস্ট মাসের মধ্যে গোটা দেশের সমস্ত বাসিন্দাদের কমপক্ষে একটি ডোজ়ে টিকাকরণের সুযোগ মিলবে। ভারতে এই ব্যবধানকেই ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ করা হয়েছে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, প্রথম ডোজ়ই দেহে ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। সুতরাং সেই ডোজ়কে যত বেশিদিন কাজ করতে দেওয়া হবে, দেহে দ্বিতীয় ডোজ়ের প্রতিক্রিয়া তত ভাল হবে। বিভিন্ন ধরনের ভ্যাকসিনের ডোজ়ের মধ্যেই ব্যবধান বাড়িয়ে এই ফলাফল পাওয়া গিয়েছে।
বিদেশে ৮০ উর্ধ্ব যাদের ফাইজ়ার ও বায়োএনটেকের এমআরএনএ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, তাঁদের যদি তিন সপ্তাহের বদলে তিন মাস বাদে দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হয়, তবে ৩.৫ গুণ বেশি কার্যকারিতা লক্ষ্য করা যায়। অপর একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ়ের মধ্যে ৯ থেকে ১৫ সপ্তাহের ব্যবধান রাখলে, তা যেমন সংক্রমণ এড়াতে সাহায্য করে, তেমনই হাসপাতালে ভর্তি বা মৃত্যুর মতো পরিস্থিতি এড়াতেও সাহায্য করে। কানাডার একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, ছয় মাস বাদে দ্বিতীয় ডোজ় দিলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সবথেকে বেশি হবে।
আরও পড়ুন: গোয়া আদালতে খারিজ সাংবাদিক তরুণ তেজপালের বিরুদ্ধে ওঠা ধর্ষণের অভিযোগ