
নয়া দিল্লি: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিবিড়ভাবে ভোটার তালিকা সংশোধন যুক্তিহীন নয়। এমনটাই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। এ দিন শীর্ষ আদালতে নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে একাধিক মামলার শুনানি চলছে। সেই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট নিবিড় সংশোধনের প্রয়োজন বলে উল্লেখ করলেও, তার সময় নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
এ দিন শীর্ষ আদালত বলে, “ওরা (নির্বাচন কমিশন) যা করছে, তা সংবিধানের অধীনেই। এর যৌক্তিকতাও রয়েছে। কম্পিউটারাইজেশনের পরে এই প্রথম হচ্ছে বলেই নির্বাচন কমিশন তারিখ নির্দিষ্ট করেছে, তাই এর পিছনে যুক্তিও রয়েছে।”
বিচারপতি শুধাংশু ধুলিয়া ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে এই মামলাগুলির শুনানি চলছে। এ দিন তারা বলেন, “নিবিড়ভাবে ভোটার তালিকা সংশোধনের মাধ্যমে কারা ভোটার তালিকায় নেই, তা যাচাই করায় কোনও ভুল নেই। কিন্তু নির্বাচনের কয়েক মাস আগেই কেন এই তালিকা সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? আপনাদের পদ্ধতি নিয়ে সমস্যা নয়, সময় নিয়ে সমস্যা…”
বিচারপতি ধুলিয়া আরও বলেন, “এই প্রক্রিয়া নিয়ে সমস্যা নেই..শুধুমাত্র যে ব্যক্তির নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাবে নির্বাচনের আগে, তিনি নিজের সপক্ষে যুক্তি দেওয়ার সময় পাবেন না। নির্বাচনী তালিকা চূড়ান্ত হয়ে গেলে আদালত তা আর স্পর্শ করবে না…অর্থাৎ কোনও ব্যক্তির নাম বাদ পড়লে তিনি নির্বাচনের আগে তা চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন না।”
শীর্ষ আদালতের তরফে আরও বলা হয়, “এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। গণতন্ত্রের একদম মূলে এই বিষয়…আবেদনকারীরা শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতাকেই চ্যালেঞ্জ করছে না, এই প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করছে…”
প্রসঙ্গত, গত মাসেই নির্বাচন কমিশন জানায়, বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিবিড় সংশোধন করা হবে। এই সংশোধনীতে নিজেকে বৈধ ভোটার হিসাবে প্রমাণ করতে আধার কার্ড বা প্যান কার্ড দেখালে হবে না, জন্ম প্রমাণপত্রই দেখাতে হবে। মা-বাবার জন্মের প্রমাণপত্রও দেখাতে হবে। শেষবার ২০০৩ সালে ভোটার তালিকা সংশোধন হয়েছিল। নতুন ভোটার, ভোটারদের মৃত্যু, অবৈধ বাসিন্দা সহ একাধিক কারণ দেখিয়ে ভোটার তালিকায় সংশোধনের প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছিল কমিশন। সেই সিদ্ধান্তকেই চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় তৃণমূল কংগ্রেস, আরজেডি থেকে শুরু করে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রাটিক রিফর্ম, পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিস সংগঠন মামলা করে।