
নয়া দিল্লি: মুর্শিদাবাদের হিংসার ঘটনা নিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসনের আর্জি খারিজ সুপ্রিম কোর্টের। রাষ্ট্রপতিকে এ বিষয়ে কোনও রকম নির্দেশ দেবে না শীর্ষ আদালত। যেখানে সুপ্রিম কোর্টে এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির সাংসদ-বিধায়করা, সেখানেই এ দিন সুপ্রিম কোর্টের তরফে সাফ জানানো হয়, রাষ্ট্রপতিকে কোনও নির্দেশ দেওয়া হবে না।
মুর্শিদাবাদ হিংসা নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আইনজীবী বিষ্ণু শঙ্কর জৈন। হিংসা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে অবিলম্বে শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপের আবেদন করে মামলা করেছিলেন আইনজীবী, দাবি করেছিলেন ৩৫৫ ধারা জারি করে রাষ্ট্রপতি শাসনের। বিচারপতি বিআর গভাই এবং বিচারপতি অগাস্টাইন জর্জ মাসিহ-র এজলাসে এ দিন শুনানি শুরু হয়।
এ দিন আইনজীবী বিষ্ণু শঙ্কর জৈন সুপ্রিম কোর্টে বলেন যে রাজ্যে শান্তি বজায় রাখতে প্য়ারামিলিটারি বাহিনী মোতায়েন থাকা দরকার। তিনি আর্জি জানান যে তিন প্রাক্তন বিচারপতির প্যানেল তৈরি করে যেন তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। মুর্শিদাবাদের হিংসায় হিন্দুদের ঘরছাড়াদের নিয়েও রিপোর্টের দাবি করেন।
এর জবাবেই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিআর গভাই ও বিচারপতি অগাস্টাইন জর্জ মাসিহ বেঞ্চের তরফে বলেন, “আপনারা চাইছেন আমরা রাষ্ট্রপতিকে শাসন জারির জন্য নির্দেশ দিই? এমনিতেই আমাদের বিরুদ্ধে আইনসভার কাজে হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠছে।”
সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের কমিটির মাধ্যমে তদন্তের আবেদন জানিয়ে শীর্ষ আদালতে আগেই মামলা দায়ের করেছিলেন দেবদত্ত মাজিদ নামে জনৈক ব্যক্তি। এরপর আজ পশ্চিমবঙ্গে ৩৫৫ ধারা জারির আবেদনের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের উপদ্রুত এলাকায় কেন্দ্রীয় সরকারকে আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করার নতুন আর্জি জানিয়ে মামলাকারীর পক্ষে শীর্ষ আদালতে মেনশন করেন আইনজীবী বিষ্ণু শঙ্কর জৈন।
আগামীকাল, মঙ্গলবার শুনানির জন্য এই মামলা তালিকাভুক্ত রয়েছে। তা সত্ত্বেও আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েনের নতুন আবেদনের দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়ে বিচারপতি বিআর গভাই এবং অগাস্টিন জর্জ মসিহর এজলাসে মামলা মেনশন করা হয়। কিন্তু সেই আবেদনে তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণের সঙ্গে খারিজ করে দিয়েছেন বিচারপতি বি আর গভাই।
প্রসঙ্গত, তামিলনাড়ু সরকার বনাম রাজ্যপাল মামলায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যবেক্ষণ রেখেছিল যে রাষ্ট্রপতিকেও বিল পাঠানোর তিন মাসের মধ্যে স্বাক্ষর করতে হবে।
এই পর্যবেক্ষণেরই সমালোচনা করে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় বলেছিলেন যে শীর্ষ আদালত তার ক্ষমতা লঙ্ঘন করছে এবং আইন বিভাগে হস্তক্ষেপ করছে। অন্যদিকে, বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে বলেছেন, “যদি সুপ্রিম কোর্ট আইন তৈরি করে, তবে সংসদের আর কী প্রয়োজন? তা বন্ধ করে দেওয়া উচিত।”