
নয়া দিল্লি: দেশে ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম নয়, একটিই ‘সাংবিধানিক ধর্ম’ থাকবে। সুপ্রিম কোর্টের কাছে এমন নির্দেশ চেয়ে একটি জনস্বর্থ মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর), এই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এমন একটি আবেদন জমা পড়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কওল এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া। আবেদনকারীকে দুই বিচারপতির বেঞ্চ জিজ্ঞাসা করেছে, এমন একটি আবেদন করার চিন্তা তাঁর মাথায় কোথা থেকে এল? বিচারপতিরা তাঁকে আরও জিজ্ঞেস করেন, নিজ নিজ ধর্ম-বিশ্বাস অনুসরণ করা থেকে দেশের নাগরিকদের কি আটকাতে পারে? বেঞ্চ বলে, “আপনি বলছেন একটিই সাংবিধানিক ধর্ম থাকা উচিত। আপনি কি নাগরিকদের তাঁদের নিজস্ব ধর্ম পালন করা থেকে আটকাতে পারবেন? এটা কি ধরনের আবেদন?”
আবেদনকারীর কাছে শীর্ষ আদালত আরও জানতে চায়, এই আবেদনের মধ্য দিয়ে তিনি কী পাওয়ার আশা করছেন?আবেদনকারী জানান, তিনি একজন সমাজ কর্মী। সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদের আওতায়, দেশে একক সাংবিধানিক ধর্ম চেয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন। প্রসঙ্গত, সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, দেশের যে কোনও নাগরিক, তাঁর মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে বলে মনে করলে, যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারবেন।
এরপর, আদালত তার কাছে এই আবেদনের ভিত্তি জানতে চায়। দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, ১৯৫০ সালের এক সাংবিধানিক আদেশ বাতিল করার আবেদন করা হয়েছে। তবে কোন সাংবিধানিক আদেশের কথা বলা হচ্ছে, আবেদনে তার উল্লেখ নেই। কীসের ভিত্তিতে এই আবেদন করা হয়েছে তা জানাতে পরেননি আবেদনকারী। এরপরই আদালত তাঁর আবেদনটি খারিজ করে দেয়।
ভারত বিবিধ ধর্মের দেশ। সংবিধানের ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদে দেশের সকল নাগরিককে নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার দেওয়া হয়েছে। ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “সকল ব্যক্তিরই জনশৃঙ্খলা, নৈতিকতা এবং স্বাস্থ্যগত সমস্যা তৈরি না করে স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন, অনুশীলন এবং প্রচার করার সমান অধিকারের রয়েছে।” কাজেই, এক দেশ এক ধর্মের দাবি, সংবিধান লঙ্ঘনকারীও বটে।