নয়া দিল্লি: লিভ-ইন সম্পর্ক নথিভুক্তিকরণের জন্য হওয়া জনস্বার্থ মামলা খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। আবেদনে বলা হয়েছিল, লিভ ইন সম্পর্কে যাঁরা আছেন, তাঁদের সামাজিক সুরক্ষার জন্য এই ধরনের সম্পর্ক নথিভুক্তিকরণের বিষয়ে কেন্দ্র যাতে একটি নির্দেশিকা জারির করে, তার জন্য আদালতের নির্দেশ চাওয়া হয়েছিল। সোমবার, এই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পিএস নরসিমহা এবং বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালার বেঞ্চ। বেঞ্চের মতে, আবেদনটি ভুল ধারণার ভিত্তিতে করা। আবেদনকারীর উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, “আপনি কি এই ব্যক্তিদের (যাঁরা লিভ-ইনে আছেন) নিরাপত্তা বৃদ্ধির চেষ্টা করছেন, নাকি মানুষ লিভ ইন রিলেশনশিপে থাকুক, তা চান না?” এই ধরনের একটি পিটিশন দাখিল করার জন্য আবেদনকারীকে তিরস্কারও করেছে আদালত।
এই আবেদনটি করেছিলেন আইনজীবী মমতা রানী। তাঁর উদ্দেশ্য নিয়ে আদালত প্রশ্ন তুললেও, তিনি লিভ-ইন সম্পর্কে থাকা ব্যক্তিদের সামাজিক সমতা এবং নিরাপত্তা দেওয়ার আবেদন করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আদালত সবসময় লিভ-ইন সম্পর্কে থাকা দেশের সকল নাগরিককে সুরক্ষা দিয়েছে। লিভ-ইন পার্টনারদের পক্ষে অসংখ্য রায় দিয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি বলেথিলেন, লিভ-ইন পার্টনারশিপ নিবন্ধন না করতে পারায়, সংবিধান অনুসরে স্বাধীনভাবে বাঁচার এবং জীবন রক্ষার অধিকার এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। আবেদনে লিভ-ইন সম্পর্ককে নিয়ন্ত্রণ করতে আইন প্রণয়নের কথাও বলা হয়েচিল। সেই সঙ্গে দেশে লিভ-ইন সম্পর্কে থাকা ব্যাক্তিদের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করার জন্য একটি তথ্য ভান্ডার তৈরির আবেদনও করা হয়েছিল।
আবেদনে আরও দাবি করা হয়েছিল লিভ-ইন সম্পর্কে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে অপরাধের সংখ্যার ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটেছে। ধর্ষণ এবং হত্যার মতো বড় বড় অপরাধ ঘটছে লিভ-ইন পার্টনারদের মধ্যে। এই কারণ হিসেবে মমতা রানী দাবি করেন, লিভ-ইন পার্টনারদের বিষয়ে কোনও আইন বা বিধান নেই। এই কারণেই তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে। বস্তুত শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডের পর গোটা দেশের একটা অংশের মানুষের মধ্যে লিভ-ইন সম্পর্ক নিয়ে একটা নেতিবাচক হাওয়া উঠেছিল। কিন্তু, এদিন শীর্ষ আদালত মমতা রানীর আবেদনটি সটান খারিজ করে দিয়ে বলেছে, এই ধরণের আবেদনের জন্য আবেদনকারীর জরিমানা করা উচিত। অত্যন্ত বোকা বোকা দরখাস্ত বলে তিরস্কার করেন প্রধান বিচারপতি।