
আগ্রা: ‘সিল’ করে দেওয়া হতে পারে ভারতের স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন, বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্য তাজমহল! শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও যোগী আদিত্যনাথ সরকারের নেতৃত্বাধীন আগ্রা পুর নিগমের দেওয়া নোটিসে এমনই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। কোটি টাকা সম্পত্তি ও জল কর বকেয়ার প্রেক্ষিতেই তাজমহল কর্তৃপক্ষকে এই নোটিস দিয়েছে আগ্রা পুর নিগম কর্তৃপক্ষ। যদিও ‘ভুলবশত’ এই নোটিস দেওয়া হয়েছে বলে দাবি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (ASI)-এর।
নোটিসে ঠিক কি লেখা রয়েছে?
আগ্রা পুর নিগমের তরফে তাজমহল কর্তৃপক্ষকে দেওয়া নোটিসে বলা হয়েছে, তাজমহলের সম্পত্তি ও জল কর বাবদ ১ কোটিরও বেশি টাকা বকেয়া রয়ে গিয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই বকেয়া পরিশোধ করতে হবে। বকেয়া পরিশোধ করা না করা হলে সিল করে দেওয়া হবে তাজমহল।
যদিও ‘ভুলবশত’ এই নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে দাবি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া-র। আগ্রা ASI-এর সুপারিটেন্ডেন্ট আর্কিওলজিস্ট ড. রাজকুমার প্যাটেলের দাবি ৩৭০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবার তাজমহলে কর্তৃপক্ষকে সম্পত্তি ও জল কর বাবদ নোটিস পাঠানো হল। ‘ভুলবশত’ এই নোটিস দেওয়া হতে পারে জানিয়ে তার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন ড. প্যাটেল। তিনি বলেন, “প্রথমত কোন স্থাপত্য বা সৌধের ক্ষেত্রে সম্পত্তিকর প্রযোজ্য নয়। উত্তরপ্রদেশ-সহ দেশের অন্যান্য রাজ্যের আইনেও বিষয়টি উল্লিখিত রয়েছে। দ্বিতীয়ত, তাজমহলে যে জলের লাইন আছে সেটা বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হয় না। তাই জলকর দেওয়ার কোনও প্রশ্ন ওঠে না। তাজ-এর ভিতরটা সম্পূর্ণভাবে জনগণের জন্য সংরক্ষিত এবং জনগণের টাকায় সংস্কার করা হয়। তাই এখানে কর বকেয়ার কোনও প্রশ্ন-ই নেই।”
প্রসঙ্গত, মুঘল আমলের তৈরি স্থাপত্য তাজমহল-কে ইউনেস্কো ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ তকমা দিয়েছে। বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের শিরোপা পেয়েছে মুঘল সম্রাট শাহজাহানের এই স্থাপত্য। ১৯২০ সাল থেকে এটি সংরক্ষিত হয়েছে হেরিটেজ স্থাপত্য হিসেবে। কোনদিনই এই স্থাপত্যের উপর কোনরকম কর ছিল না। যদিও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড এর আগেও তাজ-কে ৫ কোটি টাকার কর-নোটিস পাঠিয়েছিল এবং এএসআই-এর তরফে সৌধ সংক্রান্ত সরকারি আইন অনুযায়ী জবাব দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ড. প্যাটেল।