কানপুর: লাগাতার বৃষ্টির জেরে জমা জলে দেশজুড়ে বেড়েছে ডেঙ্গু(Dengue)-র দাপট। একইমধ্যে নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে জ়িকা সংক্রমণও (Zika Infection)। রবিবার কানপুরে (Kanpur) নতুন করে আরও ১০ জন আক্রান্তের খোঁজ মেলায় কেবল সেই জেলাতেই জ়িকা ভাইরাসে (Zika Virus) আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৮৯-এ। জেলাশাসক জি আইয়ার জানিয়েছেন, নতুন আক্রান্তদের মধ্যে একজন ভারতীয় বায়ুসেনার আধিকারিকও রয়েছেন।
উত্তর প্রদেশে (Uttar Pradesh) জ়িকার সংক্রমণ ক্রমেই বেড়ে চলছে। আতঙ্ক বাড়তে শুরু করে কানপুর সহ আশেপাশের এলাকাগুলিতে। গত সপ্তাহেই কানপুরে নতুন করে ৩০ জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণের হদিশ পাওয়া যায়। এরপর শনিবার আরও ১৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে, তাদের দেহেও জ়িকা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
জেলাশাসক জি আইয়ার বলেন, “এখনও অবধি মোট ৮৯ জন জ়িকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৫৫ জন পুরুষ ও ৩৪ জন মহিলা রয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ২৩ জনেরই বয়স ২১ বছরের নীচে। ভারতীয় বায়ুসেনার ঘাঁটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। একজন মহিলা সহ মোট ১২ জন আধিকারিক জ়িকায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।”
জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতেই বৃহস্পতিবার থেকে নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছিল। শনিবার অবধি মোট ৫২৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলেই জানিয়েছে স্বাস্থ্যকর্মীদের দলগুলি। এই নমুনা লখনউয়ের কিং জর্জস মেডিকেল ইউনিভার্সিটি ও পুণের ন্য়াশনাল ইন্সটিটিউট অব ভাইরোলজিতে পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য।
নতুন করে ২৩টি নমুনা পজেটিভ এসেছে বলে জানা গিয়েছে। এরপরই আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসেছেন, এমন ৫২৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ভারতীয় বায়ুসেনার ঘাঁটির তিন কিলোমিটার অঞ্চলের মধ্যে যারা বসবাস করেন, তাদের নমুনাও সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
গত অক্টোবরের ২৩ তারিখ কানপুরে প্রথম জ়িকা ভাইরাসে আক্রান্তের খোঁজ মেলে। ভারতীয় বায়ুসেনার এক ওয়ারেন্ট অফিসার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। এরপর থেকেই আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এখনও অবধি জেলায় মোট ৩২৮৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করে লখনউয়ের কিং জর্জস মেডিকেল ইউনিভার্সিটি ও পুণের ন্য়াশনাল ইন্সটিটিউট অব ভাইরোলজিতে পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য।
মশা দ্বারা এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে, সেই কারণে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন জেলাশাসক। তিনি জানান, সংক্রমণ যাচাই করতে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের দলগুলি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। মশার লার্ভাদমন থেকে শুরু করে জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চিহ্নিতকরণ, গুরুতর অসুস্থ রোগী ও গর্ভবতী মহিলাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে সতর্কতামূলক প্রচার অভিযানও শুরু করা হয়েছে। ভারতীয় বায়ুসেনার ঘাঁটিতেও বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।