
নয়ডা: দুর্দান্ত টেনিস খেলে মেয়ে। উঠতি তারকা। সামনে ছিল অগুনতি সুযোগ, সাফল্যের হাতছানি। সব শেষ হয়ে গেল শুধুমাত্র একটা কথায়। নিজের হাতে মেয়েকে গুলি করে খুন করলেন বাবা। পরপর পাঁচটি গুলি চালিয়ে মেয়ে রাধিকা যাদবকে খুন করেছেন বাবা দীপক যাদব! কেন এই সিদ্ধান্ত নিলেন, তাঁর উত্তরে স্তম্ভিত পুলিশ।
গুরুগ্রামের বাড়িতে বৃহস্পতিবার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় উঠতি টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদবের (২৫)। রান্না করছিলেন রাধিকা, সেই সময়ই বাবা দীপক যাদব (৪৯) পিছন থেকে পরপর ৫ বার গুলি চালান। মেয়ের মৃত্যুর পর পুলিশি জেরায় তিনি জানালেন, লোকজনের কটাক্ষেই এই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কী এমন বলা হয়েছিল?
রাজ্য স্তরে টেনিস খেলতেন রাধিকা। সম্প্রতিই তিনি কাঁধে চোট পান, কোর্টে খেলার মতো অবস্থা ছিল না তাঁর। রাধিকা নিজের উদ্যোগেই শিশুদের জন্য একটি টেনিস অ্যাকাডেমি খোলেন। সেখানে খেলা শেখাতেন, কিন্তু তাঁর বাবা হঠাৎ সেই অ্যাকাডেমি বন্ধ করিয়ে দেন।
দীপকের যুক্তি, লোকজন তাঁকে কটাক্ষ করছিল যে তিনি মেয়ের উপার্জনে খাচ্ছেন। তিনি বলেন, “ওয়াজিরাবাদে আমি যখন দুধ কিনতে যেতেন, তখন লোকজন কটাক্ষ করত যে আমি মেয়ের উপার্জনে বাঁচি। আমি খুব বিরক্ত ছিলাম। কয়েকজন আমার মেয়ের চরিত্র নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল। আমি মেয়েকে বলেছিলাম টেনিস অ্যাকাডেমি বন্ধ করে দিতে, কিন্তু ওঁ অস্বীকার করে।”
পুলিশের কাছে দীপক আরও বলেন, “আমার আত্মসম্মানে আঘাত লেগেছিল এই কথায়। আমি খুব স্ট্রেসড ছিলাম। সেই কারণেই আমি লাইসেন্সড রিভলভার বের করি, রাধিকা তখন রান্না করছিল। পরপর গুলি চালাই, ওর কোমরে গুলি লাগে। আমিই আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছি।”
রাধিকার মা মঞ্জু দেবী লিখিত বয়ান দিতে অস্বীকার করেছেন। তিনি মৌখিক বয়ানে জানিয়েছেন, তাঁর শরীর খারাপ ছিল। জ্বর থাকায় তিনি উপরে ঘরে চলে গিয়েছিলেন। এদিকে, রাধিকার কাকা কুলদীপ যাদব জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পরপর জোরে কয়েকটি শব্দ শুনেই নীচে ছুটে গিয়েছিলেন। দেখেন, মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়ে আছে রাধিকা, পাশে পড়ে রয়েছে একটি পিস্তল। তাঁর মা-বাবা সামনে দাঁড়িয়ে।
রাধিকার কাকা ও খুড়তুতো ভাই মিলেই তাঁকে গুরুগ্রামের একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কেন দাদা তাঁর একমাত্র মেয়েকে খুন করলেন, তা এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না কুলদীপ।