Encounter Threat : আত্মহত্যা নাকি এনকাউন্টার? বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ তেলাঙ্গানা হাইকোর্টের
Hyderabad Physical Harassment and Murder case : তেলাঙ্গানা হাইকোর্ট অভিযুক্তের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। ওয়ারাঙ্গাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের রিপোর্ট চার সপ্তাহের মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
হায়দরাবাদ : ছয় বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তের দেহ গতকাল রেললাইন থেকে উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে পুলিশের বক্তব্য, আত্মহত্যা করেছে ওই ব্যক্তি। কিন্তু ঘটনার আরও গভীরে গিয়ে তদন্ত চাইছে তেলাঙ্গানা হাইকোর্ট। আজ তেলাঙ্গানা হাইকোর্ট (Telangana High Court)অভিযুক্তের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের (Judicial Enquiry) নির্দেশ দিয়েছে।
তেলাঙ্গানা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রামচন্দের রাওয়ের বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। ওয়ারাঙ্গাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে এই সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ তদন্তের রিপোর্ট চার সপ্তাহের মধ্যে সিল করে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ঘটনার সূত্রপাত হয় ৯ সেপ্টেম্বর। হায়দরাবাদের বাড়ি থেকে ৯ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হয়ে যায় বছর ছয়েকের ওই নাবালিকা। সারাদিন খোঁজ না মেলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরের দিন প্রতিবেশীর বাড়ি থেকেই বিছানার চাদরে জড়ানো অবস্থায় নাবালিকার দেহ উদ্ধার হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে যৌন নির্যাতন ও দম বন্ধ করে খুনের প্রমাণ মেলে। এরপরই ওই প্রতিবেশীর খোঁজ শুরু করে পুলিশ। জানা যায়, যেদিন নাবালিকার দেহ উদ্ধার করা হয়, সেই সময় থেকেই পলাতক পাল্লাকোন্ডা রাজু নামক ওই প্রতিবেশী যুবক।
প্রাথমিক তদন্ত চলাকালীনই শোনা যায়, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু পরে যখন বোঝা যায়, খবরটি ভুয়ো ছিল, তখন এলাকাবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা সুবিচারের দাবিতে ধর্ষকের এনকাউন্টারের দাবি জানান। এ দিকে, ধর্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে, এই ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য তেলাঙ্গানার মন্ত্রী কেটি রামা রাও নিজের আগের টুইটের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার জন্য সাধারণ নাগরিকদের সাহায্য চান।
পুলিশের তরফেও অভিযুক্তের ছবি প্রকাশ করে ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এ দিকে, দুদিন আগেই তেলাঙ্গানার শ্রমমন্ত্রী মল্ল রেড্ডি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা খুব তাড়াতাড়ি ওই ধর্ষক ও খুনিকে গ্রেফতার করে ফেলব। তারপর তার এনকাউন্টার করা হবে।”
এনকাউন্টার না হলেও গতকাল সকালে ওই ধর্ষকের দেহ রেললাইনে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হল। দেহের একাধিক ট্যাটু দেখেই অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে পুলিশের বিবৃতি ঘিরেও রহস্য তৈরি হয়েছে। ধর্ষকদের সঙ্গে সঙ্গে শাস্তি দেওয়ার নামে এনকাউন্টার বিতর্কে এর আগেও হায়দরাবাদ পুলিশের নাম জড়িয়েছিল।
দুই বছর আগে ডিসেম্বরে পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের এনকাউন্টার করেছিল হায়দরাবাদ পুলিশ। এক্ষেত্রে পুলিশ যেমন সাধারণ মানুষের প্রশংসাও কুড়িয়েছিল, তেমনই সমালোচনার মুখেও পড়েছিল । ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ওই ধর্ষণকাণ্ডে হায়দরাবাদ পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল, ভোরের দিকে ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে চার অভিযুক্তকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ৷ সেখান থেকে তারা পুলিশের বন্দুক ছিনিয়ে পালানোর চেষ্টা করে । তখনই এনকাউন্টার করা হয়েছিল। তবে অনেকেরই দাবি ছিল গোটা ঘটনাটিই সাজানো ছিল। চিকিৎসকের নৃশংসভাবে হত্যা ও জনতার রোষেই পুলিশ ভুয়ো এনকাউন্টার করেছিল।
এবার তাই আর কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না তেলাঙ্গানা হাইকোর্ট। বিশেষ করে মন্ত্রীর এনকাউন্টার মন্তব্যের পর এই রহস্যমৃত্যু সব সন্দেহের তির একদিকেই ঘুরতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে চার সপ্তাহের মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ দিয়েছে তেলাঙ্গানা হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন : CAA, Farm Laws : সাড়ে ৫ হাজারেরও বেশি মামলা প্রত্যাহার করল স্তালিনের সরকার