থানে: রাস্তা দিয়ে সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় পালাচ্ছে এক নাবালক। মঙ্গলবার বিকেলে মহারাষ্ট্রের থানের কালওয়া শহরতলিতে, জামা মসজিদের কাছে এমন দৃশ্য দেখে চমকে উঠেছিলেন পথচলতি মানুষ। বুধবার (২২ নভেম্বর) পুলিশ জানিয়েছে, একটি ব্লুটুথ হেডফোন চুরির এবং ৩০০ টাকা শোধ করতে না পারার অভিযোগে নাবালকটির ওই অবস্থা করেছিল স্থানীয় দুই ব্যক্তি। তাকে বেল্ট দিয়ে বেধড়ক প্রহার করা হয়। তারপর, জোর করে তার সব পোশাক খুলিয়ে তাকে রাস্তায় যেতে বাধ্য করা হয়। থানে, মহারাষ্টের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নিজের শহর। সেখানেই এই নক্কারজনক ঘটনা ঘটায় তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে মহারাষ্ট্র জুড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, নির্যাতিত নাবালকের বয়স ১৭। মঙ্গলবার বিকেলে আচমকা তার বাড়িতে হানা দিয়েছিল তৌসিফ খানবন্দে এবং সামিল খানবন্দে নামে দুই ব্যক্তি। তারা তার বিরুদ্ধে একটি ব্লুটুথ হেডফোন ‘চুরি’ করার অভিযোগ করেছিল খানবন্দেরা। এর আগে ওই কিশোর তাদের কাছ ৩০০ টাকা ধার নিয়েছিল। সেই টাকাও ফেরত চেয়েছিল তারা। ছেলেটি জানিয়েছিল, সে ধার নেওয়া টাকা ফেরত দিতে পারবে না। এরপর, ওই দুই ব্যক্তি তাকে বলে, তাদের সঙ্গে জামা মসজিদের দিকে যেতে। মসজিদের কাছে পৌঁছনোর পর, তৌসিফ খানবন্দে ছেলেটিকে চড় মারেন, লাথি মারেন, ছেলেটির প্যান্ট থেকেই বেল্ট খুলে নিয়ে ছেলেটিকে মারতে থাকে। ছেলেটি সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে শুরু করেছিল, কিন্তু, কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। সামিল পুরো ঘটনার ভিডিয়ো রেকর্ড করে।
सन्मा. मुख्यमंत्र्यांच्या ठाणे शहरात फक्त 300rs परत दिले नाही म्हणून 17वर्षीय मुलाला भर रस्त्याने निर्वस्त्र करून दोनजणांनी मारहाण केली.
सर्वसामान्यांचे सरकार म्हणवणाऱ्या या सरकारमध्ये गोरगरिबाची व्यक्ति प्रतिष्ठान काहीच नाही का? @Dev_Fadnavis @ShivSenaUBT_ @ShivsenaUBTComm pic.twitter.com/KDUU4OjrnK— SushmaTai Andhare🔥 (@andharesushama) November 22, 2023
এরপরে তারা দুজনে ছেলেটিকে জনসমক্ষে সম্পূর্ণ নগ্ন করে তাকে হেনস্থা করতে থাকে। এক ফাঁকে, একটি সরু গলি দিয়ে কোনওক্রমে পালায় নাবালক। সেই সময় তার শরীরে এক টুকরো কাপড়ও ছিল না। পরে, সে কালওয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েছিল। কিন্তু, পুলিশ এই বিষয়ে শুধুমাত্র একটি ‘নন-কগনিজেবল’ অপরাধ নথিভুক্ত করেছিল। কিন্তু, মঙ্গলবার রাত থেকে এই ঘটনার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। সমাজকর্মী ড. বিনু ভার্গিস এই ঘটনার বিষয়ে সরব হন। ভিডিয়োটি তিনি থানে পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের কাছে পাঠান। অবশেষে ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ, গণেশ এন গাওয়াড়ের নির্দেশে এই ঘটনার বিষয়ে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়।
এদিন সকাল থেকেই এই বিষয়ে তদন্ত শুরু করে কালওয়া থানার পুলিশ। কিশোর ছেলেটির অভিযোগের ভিত্তিতে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভইন্ন ধারার পাশাপাশি, পকসো আইনের ধারাতেও অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এদিন বিকেলে প্রধান অভিযুক্ত তৌসিফকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক পুলিশ কর্তা। তবে, অপর অভিযুক্ত সামিল এখনও পলাতক। তাঁর সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় হানা দিচ্ছে পুলিশ। তবে, এফআইআর দায়ের করতে ২০ ঘন্টারও বেশি সময় দেরি হল কেন, এই প্রশ্নের সম্নুখীন হতে হচ্ছে পুলিশকে। পুলিশের সাফাই, এফআইআর দায়ের করতে দেরি হয়নি। নির্যাতিত কিশোর নাবালক এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। থানায় আসার পর তাঁকে মেডিকেল চেক-আপ এবং চিকিত্সার জন্য এক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলেই, এফআইআর দায়ের করতে দেরি হয় বলে দাবি করেছে পুলিশ।