‘নেতাজী কমিটিতে’ নেই তাঁরই হাতে গড়া ফরওয়ার্ড ব্লকের কোনও সদস্য!

Jan 11, 2021 | 6:04 PM

কমিটিতে নেই নেতাজীরই গঠিত দল 'অল ইন্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লক' এর কোনও সদস্য। প্রশ্ন তুলেছেন অল ইন্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লকের রাষ্ট্রীয় মহামন্ত্রী দেবব্রত বিশ্বাস। আর তা নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

Follow Us

নিউ দিল্লি: নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর (Netaji Subhas Chandra Bose) ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ৮৫ জনের ওই কমিটিতে পৌরহিত্য করছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কমিটিতে রয়েছেন বহু বিশিষ্ট বাঙালি। রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, মিঠুন চক্রবর্তীরা। কিন্তু সেই কমিটিতে নেই নেতাজীরই গঠিত দল ‘অল ইন্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লক’ এর কোনও সদস্য। প্রশ্ন তুলেছেন অল ইন্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লকের রাষ্ট্রীয় সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস। আর তা নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

দেবব্রত বিশ্বাস

উল্লেখ্য, একুশের নির্বাচনের আগে ভোটযুদ্ধে এখন হাতিয়ার নেতাজী, মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। তাঁদের বক্তব্য, বিধানসভা নির্বাচনের আগেই যে রেওয়াজ তৈরি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এবার লোকসভা নির্বাচনের আগে নেতাজীর প্রতি বাঙালির আবেগ বুঝেই মোদী-শাহ জুটিও সেই পথে হাঁটছেন। কেন্দ্রীয় সরকার নেতাজীর ১২৫ জন্মজয়ন্তী উদযাপনের জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে।

সপ্তাহ তিনেক আগেই প্রধানমন্ত্রীর টুইটার হ্যান্ডল থেকে লেখা হয়, “নেতাজী সুভাষ বসুর সাহস সুবিদিত। এক জন বিদগ্ধ পণ্ডিত, সৈনিক ও শ্রেষ্ঠ এই জননেতার ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী আমরা শীঘ্রই উদযাপন করতে চলেছি। এ জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তৈরি করা হয়েছে। আসুন, আমরা সকলে মিলে বিশেষ এই অনুষ্ঠানটিকে সাড়ম্বরে উদযাপিত করি”। প্রধানমন্ত্রীর পৌরহিত্যে গঠিত এই কমিটিতে রয়েছেন বিশেষজ্ঞ, ইতিহাসবিদ এবং লেখক, আজাদ হিন্দ ফৌজের সঙ্গে জড়িত থাকা ব্যক্তিরাও। নেতাজীর জন্মজয়ন্তী শ্রদ্ধাঞ্জলি বর্ষ কীভাবে পালন করা হবে, তার রূপরেখা তৈরি করবে এই কমিটি।

কিন্তু নিজের মোবাইলে একটি ভিডিয়ো করে কমিটি গঠনে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ‘অল ইন্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লক’এর রাষ্ট্রীয় মহামন্ত্রী দেবব্রত বিশ্বাস। ভিডিয়োতে তিনি একাধিক অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর কথায়, প্রধানমন্ত্রী একটা কমিটি গঠন করেছেন। কমিটিতে যাঁরা সদস্য, তাঁদের নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। তাঁরা প্রত্যেকেই নিজেদের জায়গায় সুপ্রতিষ্ঠিত। কিন্তু একটা প্রশ্ন দেশের মানুষের মনে উঠছে, নেতাজীরই গঠিত দল ‘অল ইন্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লক’ থেকে কোনও সদস্যকে এই কমিটিতে রাখা হল না? ”


দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, “কিছু দাবিতে আমরা লড়াই চালাচ্ছি। এক, নেতাজীর জন্মদিনকে ‘দেশপ্রেম দিবস’ রূপে সরকারকে ঘোষণা করতে হবে। দুই, নেতাজীর আদর্শ-দর্শন আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য স্কুল-কলেজের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তিন, নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্য প্রকাশ করতে হবে।”

প্রসঙ্গত, অটল বিহারী বাজপেয়ীর আমলে গঠিত হয় মুখার্জি কমিশন। ওই কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়, তাইহোকুকে ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট কোনও বিমান দুর্ঘটনাই হয়নি। সেপ্রসঙ্গ এদিন আরও একবার তুলে ধরেন দেবব্রত বিশ্বাস। তিনি বলেন, “আমাদের এই সরকারের কাছে আশা ছিল, যে নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্য সংক্রান্ত তদন্ত হবে। দলিল পেশ করা হবে। কিন্তু তেমনটা হয়নি। আমরা এই সরকারকেও দুটো চিঠি দিয়েছি।” তবে আদৌ এবার নেতাজীর জন্মদিনকে ‘দেশপ্রেম দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করা হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন:  পুরী মন্দিরে প্রবেশে আর লাগবে না কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট, কবে থেকে কার্যকর এই নিয়ম?

তবে রাজনীতির বিশেষজ্ঞ ও নেতাজীকে নিয়ে গবেষণা করা বিশেষজ্ঞরা বলছেন অন্য কথা। তাঁদের বক্তব্য, কখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কখনও নরেন্দ্র মোদী- অপ্রকাশিত নেতাজী-ফাইল আমজনতার সামনে খুলে দিয়ে দেশ জুড়ে গণ আবেগে সওয়ার হতে চাইছেন দু’জনেই। প্রধানমন্ত্রী বলছেন, দেশবাসীর জন্য এ এক বিশেষ দিন। নেতাজীর মৃত্যু কবে, কী ভাবে, তা নিয়ে বার বার রহস্য উসকে দিচ্ছেন রাজনীতিকরা। তবে নেতাজীকে নিয়ে এই রাজনীতিকরণ মেনে নিতে পারছেন না বসু পরিবারেই একাংশ। বিরক্ত অনেকই।

নিউ দিল্লি: নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর (Netaji Subhas Chandra Bose) ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ৮৫ জনের ওই কমিটিতে পৌরহিত্য করছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কমিটিতে রয়েছেন বহু বিশিষ্ট বাঙালি। রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, মিঠুন চক্রবর্তীরা। কিন্তু সেই কমিটিতে নেই নেতাজীরই গঠিত দল ‘অল ইন্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লক’ এর কোনও সদস্য। প্রশ্ন তুলেছেন অল ইন্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লকের রাষ্ট্রীয় সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত বিশ্বাস। আর তা নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

দেবব্রত বিশ্বাস

উল্লেখ্য, একুশের নির্বাচনের আগে ভোটযুদ্ধে এখন হাতিয়ার নেতাজী, মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। তাঁদের বক্তব্য, বিধানসভা নির্বাচনের আগেই যে রেওয়াজ তৈরি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এবার লোকসভা নির্বাচনের আগে নেতাজীর প্রতি বাঙালির আবেগ বুঝেই মোদী-শাহ জুটিও সেই পথে হাঁটছেন। কেন্দ্রীয় সরকার নেতাজীর ১২৫ জন্মজয়ন্তী উদযাপনের জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে।

সপ্তাহ তিনেক আগেই প্রধানমন্ত্রীর টুইটার হ্যান্ডল থেকে লেখা হয়, “নেতাজী সুভাষ বসুর সাহস সুবিদিত। এক জন বিদগ্ধ পণ্ডিত, সৈনিক ও শ্রেষ্ঠ এই জননেতার ১২৫ তম জন্মজয়ন্তী আমরা শীঘ্রই উদযাপন করতে চলেছি। এ জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তৈরি করা হয়েছে। আসুন, আমরা সকলে মিলে বিশেষ এই অনুষ্ঠানটিকে সাড়ম্বরে উদযাপিত করি”। প্রধানমন্ত্রীর পৌরহিত্যে গঠিত এই কমিটিতে রয়েছেন বিশেষজ্ঞ, ইতিহাসবিদ এবং লেখক, আজাদ হিন্দ ফৌজের সঙ্গে জড়িত থাকা ব্যক্তিরাও। নেতাজীর জন্মজয়ন্তী শ্রদ্ধাঞ্জলি বর্ষ কীভাবে পালন করা হবে, তার রূপরেখা তৈরি করবে এই কমিটি।

কিন্তু নিজের মোবাইলে একটি ভিডিয়ো করে কমিটি গঠনে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ‘অল ইন্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লক’এর রাষ্ট্রীয় মহামন্ত্রী দেবব্রত বিশ্বাস। ভিডিয়োতে তিনি একাধিক অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর কথায়, প্রধানমন্ত্রী একটা কমিটি গঠন করেছেন। কমিটিতে যাঁরা সদস্য, তাঁদের নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। তাঁরা প্রত্যেকেই নিজেদের জায়গায় সুপ্রতিষ্ঠিত। কিন্তু একটা প্রশ্ন দেশের মানুষের মনে উঠছে, নেতাজীরই গঠিত দল ‘অল ইন্ডিয়া ফরওয়ার্ড ব্লক’ থেকে কোনও সদস্যকে এই কমিটিতে রাখা হল না? ”


দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, “কিছু দাবিতে আমরা লড়াই চালাচ্ছি। এক, নেতাজীর জন্মদিনকে ‘দেশপ্রেম দিবস’ রূপে সরকারকে ঘোষণা করতে হবে। দুই, নেতাজীর আদর্শ-দর্শন আগামী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য স্কুল-কলেজের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তিন, নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্য প্রকাশ করতে হবে।”

প্রসঙ্গত, অটল বিহারী বাজপেয়ীর আমলে গঠিত হয় মুখার্জি কমিশন। ওই কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়, তাইহোকুকে ১৯৪৫ সালের ১৮ অগাস্ট কোনও বিমান দুর্ঘটনাই হয়নি। সেপ্রসঙ্গ এদিন আরও একবার তুলে ধরেন দেবব্রত বিশ্বাস। তিনি বলেন, “আমাদের এই সরকারের কাছে আশা ছিল, যে নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্য সংক্রান্ত তদন্ত হবে। দলিল পেশ করা হবে। কিন্তু তেমনটা হয়নি। আমরা এই সরকারকেও দুটো চিঠি দিয়েছি।” তবে আদৌ এবার নেতাজীর জন্মদিনকে ‘দেশপ্রেম দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করা হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন:  পুরী মন্দিরে প্রবেশে আর লাগবে না কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট, কবে থেকে কার্যকর এই নিয়ম?

তবে রাজনীতির বিশেষজ্ঞ ও নেতাজীকে নিয়ে গবেষণা করা বিশেষজ্ঞরা বলছেন অন্য কথা। তাঁদের বক্তব্য, কখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কখনও নরেন্দ্র মোদী- অপ্রকাশিত নেতাজী-ফাইল আমজনতার সামনে খুলে দিয়ে দেশ জুড়ে গণ আবেগে সওয়ার হতে চাইছেন দু’জনেই। প্রধানমন্ত্রী বলছেন, দেশবাসীর জন্য এ এক বিশেষ দিন। নেতাজীর মৃত্যু কবে, কী ভাবে, তা নিয়ে বার বার রহস্য উসকে দিচ্ছেন রাজনীতিকরা। তবে নেতাজীকে নিয়ে এই রাজনীতিকরণ মেনে নিতে পারছেন না বসু পরিবারেই একাংশ। বিরক্ত অনেকই।

Next Article