রাঁচি: ধানবাদে অটোর ধাক্কায় বিচারক মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে নেমে প্রথমেই দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এবার আরও এক গ্রেফতারির সঙ্গে হাত পড়ল পুলিশ প্রশাসনেও। তদন্তে গাফিলতির অভিযোগে সাসপেন্ড করা হল স্থানীয় থানা পাথরডিহির ওসি উমেশ মাঝিকে।
ঘাতক অটোটি চুরি করা হয় স্থানীয় এলাকা থেকেই। তার চালক ও সহকারীকে গ্রেফতারের পরই সেই অটোর মালিকের খোঁজ পড়ে। তখনই জানা যায়, অটোটি চুরির এফআইআর আগেই দায়ের হয়েছিল। অটোটির মালিক এক মহিলা। নাম সুগ্নি দেবী। তাঁর স্বামী রামদেব লোহরারকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল। লোহরারের নামে একাধিক মামলা আগে থেকেই রয়েছে। বার কয়েক তিনি গ্রেফতারও হয়েছেন। এই ঘটনাতেও তিনি জড়িত থাকতে পারেন বলে সন্দেহ পুলিশের। এদিকে, এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হওয়ার পর শুক্রবার সকাল পর্যন্ত তা নিয়ে স্থানীয় ওসি কোনও ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ। তার ভিত্তিতেই ধানবাদের এসএসপি (Senior Superintendent of Police) সঞ্জীব কুমার উমেশ মাঝিকে সাসপেন্ড করেন ।
স্থানীয় পাথরডিহি এলাকারই বাসিন্দা ছিলেন নিহত ধানবাদ আদালতের বিচারক উত্তম আনন্দ। ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ মিটার দূরে হীরাপুরে জাজেস কলোনিতে থাকতেন। বুধবার সকালে এই ঘটনা ঘটার পর আনন্দকে মারাত্মক জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। তাঁর মাথার পিছন দিকে মারাত্মক জখম হয়ে গিয়েছিল। মুখও বিকৃত হয়ে যায়। তাঁর চালক শেষে দেহ শনাক্ত করেন।
এরই মধ্যে আনন্দ ফিরছেন না দেখে বাড়ির লোকও খোঁজ শুরু করেন। তখনই ঘটনা জানাজানি হয়। শেষে সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে গিয়ে অটোর ধাক্কার ছবি সামনে আসে। মুহূর্তে ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। ধানবাদ আদালত থেকে তাতে হস্তক্ষেপের জন্য সুপ্রিম করতে বিষয়টি জানানো হয়। ঝাড়খণ্ড আদালত স্বতঃপ্রণোদিত মামলা শুরু করে। সেই মামলা শুরুর পরই অটোর চালক ও তাঁর সহকারী গ্রেফতার হন। তাঁদের দাবি, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গিয়ে ধাক্কা লাগে। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আইনজীবী মহলের এই ধারণা পরিষ্কার যে, গাড়িটি সোজা চলতে চলতে আচমকা নিজের পথ বদলেই আনন্দকে গিয়ে ধাক্কা মারে।
এর মধ্যে সামনে এসেছে আরও তিনটি ঘটনা। প্রথমত অটোর মালিকের স্বামীকে সন্দেহের বিষয়টি। আরও দুটি ঘটনার একটি হল, ঝরিয়ার প্রাক্তন বিধায়ক সঞ্জীব সিংয়ের সহযোগী রণজয় সিংয়ের খুনের মামলার শুনানি উত্তম আনন্দের এজলাসে চলছিল। আর দুই, তিনদিন আগেই উত্তরপ্রদেশের কুখ্যাত গ্যাংস্টার অনুভব সিং ও আমন সিংয়ের সঙ্গী রবি ঠাকুরের জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছিলেন আনন্দ। সব দিক খোলা রেখেই তদন্ত চলছে। আরও পড়ুন: ইঁদুর দৌড়ে ছুটতে গিয়েই ক্লান্ত ওরা! শিশু-আত্মহত্যায় দেশে দ্বিতীয় বাংলা, এনসিআরবির রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য