সেকেন্দ্রাবাদ: ব্যাগের ভিতর থরে থরে সাজানো নোটের বান্ডিল। সব মিলিয়ে ২ লক্ষ টাকা। ব্যস্ত রাস্তার মাঝে কেউ তাঁকে দেখার ছিল না। চাইলেই সেই ব্যাগ হস্তগত করে রওনা দিতে পারতেন বাড়ির দিকে। সংসদে আর্থিক স্বচ্ছলতা আসত তাঁর। কিন্তু অসৎ হননি সেকেন্দ্রাবাদের বাসিন্দা সতীশ যাদব। টাকা ভর্তি ব্যাগ পৌঁছে দিয়েছেন সরাসরি থানায়। স্বাভাবিকভাবেই, প্রশংসার ঝড় উঠেছে একজন সাধারণ লাইনম্যানের এহেন সৎ মনোভাবের কারণে।
ঘটনাটি ঘটেছে ১৮ নভেম্বর। প্রতিদিনের মতো নিজের কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরছিলেন সতীশ। লালাগুড়ার কাছে হঠাৎ একটি মোটর সাইকেল দ্রুত গতিতে তাঁকে পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যায়। সেই সময় ওই বাইক থেকে একটি ব্যাগ রাস্তায় পড়ে যায়। ব্যস্ত রাস্তায় একমাত্র সতীশ ছাড়া এই বিষয়টি আর কেউই খেয়াল করেননি। কৌতুহলবশত তিনি ব্যাগটি রাস্তা থেকে তুলে নেন। প্রথমে তিনি কিছুদূর পর্যন্ত নিজে ঘোরাঘুরি করে ওই বাইক চালককে খোঁজার চেষ্টা করেন। কিন্তু ততক্ষণে সেই মোটরসাইকেল আরোহী অনেকদূর চলে গিয়েছেন। কিন্তু অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির ব্যাগ সঙ্গে রেখে কী করবেন তিনি? এই প্রশ্নই ভাবায় সতীশকে।
ব্যাগে কী আছে জানার জন্য, তার ভিতরে দেখতেই যেন বুক ঠান্ডা হয়ে আসে ‘মধ্যবিত্ত’ সতীশের। কারণ ব্যাগের ভিতর ছিল থরে থরে সাজানো নোটের বান্ডিল। যা সব মিলিয়ে প্রায় দুই লক্ষ টাকা। এহেন পরিস্থিতিতে লোভ সংবরণ করাই মূল চ্যালেঞ্জ। অনেকেই টাকার লোভে আর ব্যাগ ফেরানোর চেষ্টাই করেন না। কিন্তু সতীশ বিপরীত রাস্তায় হাঁটে। সরাসরি সেইখান থেকে তিনি চলে আসেন নিকট মূর্তি লাল্লাগুড়া থানায়। সেখানে সমস্ত ঘটনা ব্যাখ্যা করে পুলিশের কাছে তিনি ব্যাগটি সপে দেন। স্বাভাবিকভাবেই সতীশের এহেন মনোভাব প্রশংসিত হয়েছে। থানায় পৌঁছে সতীশ যাদব তার সততার জন্য প্রশংসিত হন।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, এ ধরনের কাজ সমাজে সততা ও দায়িত্বশীলতার বার্তা দেয়। পুলিশ যেমন মানুষের জন্য সব সময় কাজ করে, তেমনভাবে ই সতীশের মতন মানুষ এইভাবে দায়িত্ব সহকারে একজন নাগরিকের ভূমিকায় উঠে এলে পুলিশের কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়।