
নয়া দিল্লি: পাস হওয়ার চার বছরেরও বেশি সময় পর, সোমবার (১১ মার্চ) বিতর্কিত নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন, ২০১৯ কার্যকর করেছে মোদী সরকার। আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের কারণে ভারতে এসে আশ্রয় নেওয়া সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের নাগরিকত্ব দেওয়ার লক্ষ্যেই এই সংশোধনী আনা হয়েছে। এই সংশোধনী অনুসারে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে, এই তিন দেশের ছয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের আর অবৈধ উদ্বাস্তু বলা হবে না। যদি তারা গত ১৪ বছরের মধ্যে অন্তত পাঁচ বছর বা গত একবছর ধরে ভারতে থেকেছেন বলে প্রমাণ করতে পারেন, তাহলে তারা ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই অবস্থায় আপনি যদি বাংলাদেশ, পাকিস্তান বা আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, খ্রিস্টান বা পার্সি হন, তাহলে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আপনাকে কী কী নথি দেখাতে হবে?
সোমবার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর করার যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, তাতে উদ্বাস্তুদের ভারতের নাগরিকত্ব প্রদানের জন্য ফর্ম ৮এ (Form viiiA) রাখা হয়েছে। এই ফর্মের নিয়ম অনুসারে, আবেদনকারীকে দুটি নথি দিতে হবে। ‘তফসিল ১ক’-তে তালিকাভুক্ত নয়টি বিকল্পের মধ্যে একটি এবং তফসিল ১খ-তে তালিকাভুক্ত ২০টি বিকল্প থেকে একটি নথি দেখাতে হবে। নথিগুলির বৈধতার মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও, সেগুলি গ্রহণ করা হবে।
‘তফসিল ১ক’-তে তালিকাভুক্ত নথিগুলির মধ্যে রয়েছে – আফগানিস্তান, বাংলাদেশ বা পাকিস্তানের জারি করা পাসপোর্ট, ভারতের বিদেশী আঞ্চলিক নিবন্ধন কর্মকর্তা বা বিদেশী নিবন্ধন অফিসের জারি করা একটি রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা রেসিডেন্সিয়াল পারমিট, তাদের নিজ দেশ থেকে জারি করা জন্মের শংসাপত্র, স্কুল, কলেজ, বা বিশ্ববিদ্যালয়ের জারি করা শিক্ষা ক্ষেত্রের সার্টিফিকেট, তিন দেশের যে কোনও ধরনের সরকারি পরিচয়পত্র, জমির দলিল বা বাড়ি ভাড়ার নথি।
আর, তফসিল ১খ-র তালিকাভুক্ত নথিগুলির মধ্যে রয়েছে – ভারতে জনগণনার সময় জারি করা স্লিপ, ভিসার বা ভারতে আসার পর ইমিগ্রেশন স্ট্যাম্পের অনুলিপি, আবেদনকারীর রেশন কার্ড, সরকারি সার্টিফিকেট বা পারমিট (ড্রাইভিং লাইসেন্স, আধার কার্ড ইত্যাদি), ভারত থেকে জারি করা আবেদনকারীর জন্মের শংসাপত্র, প্যান কার্ড, বীমার পলিসি নথি, বিদ্যুতের বিল, ভারতীয় আদালতের নথি ইত্যাদি।
এছাড়া, আবেদনকারীদের কাছে যদি কোনও বৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি পাসপোর্ট থাকে, তার প্রতিলিপি জমা দিতে হবে। যদি থাকে, তাহলে একটি বৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ রেসিডেন্সিয়াল পারমিটও জমা দিতে হবে। সেই সঙ্গে, আবেদনকারীকে অবশ্যই একটি হলফনামা দিয়ে বলতে হবে, ফর্মে তিনি যে সকল তথ্য দিয়েছেন, তা সত্য। দিতে হবে চরিত্রের প্রমাণও। এর জন্য কোনও ভারতীয় নাগরিকের কাছ থেকে একটি হলফনামা নিয়ে জমা দিতে হবে। এছাড়া, আবেদনকারীকে ঘোষণা করতে হবে যে তিনি ভারতের সংবিধানের অষ্টম তফসিলে উল্লিখিত ভাষাগুলির অন্তত একটি জানেন। বিধিতে বলা হয়েছে, আবেদনকারী ওই ভাষা পড়তে, লিখতে বা বলতে পারলেই তিনি সেটি জানেন বলে ধরা হবে।