
নয়া দিল্লি: কখনও ট্রেনটা নেমে যাবে খাদের মতো পথে, আবার কখনও চড়াই রাস্তায় সোজা উঠে যাবে উপরে। ভাবলেই যেন এক রোমাঞ্চকর অনুভূতি জাগে। রূপকথা নয়, ভারতের মাটিতেই তৈরি হয়েছে এমন এক রেল লাইন। সেখানেই শেষ নয়, অন্ধকার গুহার ভিতর দিয়ে আপনাকে পেরোতে হবে ১১৯ কিলোমিটার পথ। মাঝে পড়বে একের পর এক ব্রিজ। আর সেই রেলপথে ছুটবে বন্দে ভারত। সব মিলিয়ে যাত্রীদের এক অ্যাডভেঞ্চারের সাক্ষী করতে প্রস্তুত রেল।
এই ট্রেন যাত্রার সময় ৯২৭টি সেতু অতিক্রম করতে হবে ট্রেনটিকে। ট্রেনের জানালা দিয়ে বাইরে তাকালে দু পাশে দেখা যাবে বরফে ঢাকা পাহাড়। আর গোটা রাস্তা যেতে সময় লাগবে মাত্র ৩ ঘণ্টা।
১৯৯৭ সালে এই প্রকল্পটি শুরু করে রেল। ১৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ট্র্যাকে প্রথম ট্রেনের উদ্বোধন করতে চলেছেন। এই ট্র্যাকে জম্মু থেকে কাশ্মীর যাত্রা করতে পারবেন যাত্রীরা। জম্মুর শ্রী মাতা বৈষ্ণো দেবী কাটরা স্টেশন থেকে কাশ্মীরের শ্রীনগর স্টেশন পর্যন্ত চলবে রেল।
কী কী থাকছে এই লাইনে
১. মোট ৩৬টি সুড়ঙ্গ অতিক্রম করতে হবে ট্রেনটিকে। এই টানেলগুলির মোট দূরত্ব প্রায় ১১৯ কিলোমিটার। পুরো ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য ২৭২ কিলোমিটার।
২. রুট জুড়ে প্রায় ৯২৭টি ছোট-বড় সেতু পার হতে হবে। এর মধ্যে চেনাব নদীর উপর নির্মিত সেতুটি বিশ্বের সর্বোচ্চ। এই সেতুর উচ্চতা ৩৫৯ মিটার, যা আইফেল টাওয়ারের চেয়ে ৩৫ মিটার বেশি।
৩. টি-৫০ টানেল হল দীর্ঘতম টানেল, যার দৈর্ঘ্য ১২.৭৭ কিলোমিটার। এটিকে ভারতের দীর্ঘতম পরিবহন সুড়ঙ্গও বলা হচ্ছে।
৪. টানেল টি-৮০ হল দ্বিতীয় দীর্ঘতম টানেল যার দৈর্ঘ্য ১১.২ কিলোমিটার এবং এটি পীর পাঞ্জাল পর্বতমালার বানিহাল এবং কাজিগুন্ডের মধ্যে নির্মিত। অর্থাৎ বরফে ঢাকা পাহাড়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
৫. টানেল টি-৩৪-এর দৈর্ঘ্য ৫ কিলোমিটারেরও বেশি। এটি পাই-খাদ এবং আঞ্জি খাদের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে।
৬. টানেল টি-৩৩ এর দৈর্ঘ্য ৩.২ কিলোমিটার, যা ত্রিকুটা পাহাড়ে নির্মিত হয়েছে।
৭. টানেল টি-২৫ প্রস্তুত করতে ৬ বছর সময় লেগেছে রেলের। এই ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গের নীচে ভূগর্ভস্থ জলের স্রোত ছিল, তাই সেখানে সুড়ঙ্গ তৈরি করা সহজ ছিল না।