আগরতলা: ত্রিপুরায় (Tripura) গিয়ে বারবার বাধার মুখে পড়তে হয়েছে তৃণমূল (TMC) নেতৃত্বকে। একাধিকবার আবেদন করেও অনুমতি পাওয়া যায়নি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার। এরই মধ্যে ঘাসফুল শিবিরের নেতাদের কাছে আসছে একের পর এক নোটিস। হাজিরা দিতে বলা হচ্ছে ত্রিপুরায়। অবশেষে ত্রিপুরা হাইকোর্টের (High Court) নির্দেশে সেই মামলায় স্বস্তি পেল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানিতে ত্রিপুরা পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে পুজো পর্যন্ত কোনও নোটিস না দেওয়া হয় এই মামলায়। পাশাপাশি, কুণাল ঘোষদের নোটিস দেওয়ায় অস্বস্তি বেড়েছে ত্রিপুরা পুলিশের। তদন্ত শেষ হয়ে গিয়েছে বলে আদালতে দাবি করেছিল পুলিশ। অথচ তারপরও কেন নোটিস দেওয়া হচ্ছে? তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে পুলিশকে।
বিপ্লব দেব সরকারের সঙ্গে তৃণমূলের সংঘাত প্রকট হচ্ছে বারবার। নাছোড়বান্দা তৃণমুলও। আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে মামলা। কিছুতেই পিছপা হতে রাজি নয় অভিষেকরা। দিন দুয়েক আগেই খোয়াই থানা থেকে নোটিস আসে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কাছে। এর আগে একইভাবে নোটিস এসেছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও।
ত্রিপুরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে করা তৃণমূলের আবেদনের শুনানির প্রথম দিনই অ্যাডভোকেট জেনারেল দাবি করেছিলেন, পুলিশের তদন্ত শেষ হয়ে গিয়েছে। আজকের শুনানিতে
ত্রিপুরা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা ও বিশ্বজিৎ দেব বলেন, ‘ওরা মিথ্যে বলেছিল। তারপর কুণাল ঘোষকে নোটিশ পাঠিয়েছে। উনি কমপ্লাই করেছেন।’ প্রধান বিচারপতি তখন নোটিস ও নথি দেখতে চান। আইনজীবীরা সেই নথি পেশ করেন। কুণালের নোটিস নথি দেখার পর আদাল নির্দেশ দেয়, আর কাউকে নোটিস পাঠানো যাবে না। পরবর্তী শুনানির জন্য রাজ্য সময় চায়। কারণ এজি ছিলেন না এ দিন। পুজোর পর ফের শুনানি।
এ দিকে, ত্রিপুরায় হাজিরা দিতে গিয়ে থানাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন কুণাল ঘোষ। আপাতত হাসপাতালেই ভর্তি আছেন তিনি। খোয়াই থানা থেকে নোটিস দেওয়া হয়েছিল তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষকে। খোয়াই থানায় যাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি ফোন করেন আইও-কে। কিন্তু কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, সোমবার তিনি আগরতলা পৌঁছলে খোয়াই থানা থেকে তাঁকে আমাকে ফোন করে জানানো হয় যে তাঁকে খোয়াই থানায় যেতে হবে না। এনসিসি থানায় যাওয়ার কথা বলা হয়। সেই থানাতেই বেশ কিছুক্ষণ চলে জিজ্ঞাসাবাদ। এরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর সুগার বেশি ও প্রেসার কম থাকায় অসুস্থ বোধ করেন তিনি। আপাতত হাসপাতালেই আছেন কুণাল ঘোষ। আজ বিকেলে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসা হবে।
অন্যদিকে, একবার-দু’বার নয় বারবার নানা কারণে বাতিল হয়ে যাচ্ছে অভিষেকের সভা। প্রথমে ১৬, পরে ১৭ ও তারপর ২২ তারিখে সভার অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু যতবারই কর্মসূচির আবেদন জানানো হয়, পুলিশ নাকচ করে দেয়। সেই প্রেক্ষিতে যথারীতি ত্রিপুরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় তৃণমূল। এরই মধ্যে আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত সব ধরনের সভা-সমিতি উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিপ্লব দেব সরকার।
আরও পড়ুন: Durga Puja 2021: তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা! দুর্গা পূজা নিয়ে ফের মামলা হাইকোর্টে