আগরতলা: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন বছর ২৩-র যুবতী। প্রেমিকের সঙ্গে ঘনিষ্ট মূহুর্তের ভিডিয়ো ফাঁস হয়ে যেতেই স্থানী. বাসিন্দারা ভরা বাজারে পর্দা টাঙিয়ে সেই ভিডিয়ো দেখায়। “উচিত শিক্ষা” দিতে গ্রামের সবার সামনে জুতোর মালা পরিয়ে, ন্যাড়া করানো হয় ওই মহিলাকে। তবে এখানেই থামেননি গ্রামবাসীরা। বিবস্ত্র করে ঘোরানো হয় গোটা গ্রাম। অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করলেন ওই মহিলা।
সংবাদ মাধ্যমে এই খবর প্রকাশ হতেই ত্রিপুরা হাইকোর্ট একটি স্বত্বঃপ্রণোদিত মামলা করে এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে চার মহিলা সহ সাতজনকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,রবিবার দক্ষিণ ত্রিপুরার সাবরুম গ্রামের স্থানীয় একটি বাজারে বড় স্ক্রিন লাগিয়ে তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে ঘনিষ্ট মুহূর্তের ভিডিয়ো দেখানো হয়। এরপরই স্থানীয় বাসিন্দারা মঙ্গলবার তাঁর বাড়ির সামনে জড়ো হয়। ওই তরুণীকে জুতোর মালা পরিয়ে, ন্যাড়া করিয়ে ও উলঙ্গ অবস্থায় দড়ি দিয়ে বেঁধে গোটা গ্রাম ঘোরানো হয়।
এই অপমান সহ্য করতে না পেরেই ওই তরুণী বাড়ি ফিরে এসে বিষ খান এবং ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। ওই তরুণীর পরিবার প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ আনেন। মিডিয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি এএ কুরেশি ও বিচারপতি এস তলাপাত্র স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে এবং রাজ্যের মুখ্য সচিব, ডিজিপি, এসপি ও এসডিপিও-কে গোটা ঘটনার তদন্ত করে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দিতে বলেন।
আদালতের তরফে এই ঘটনাকে “মানবাধিকারের সম্ভাব্য সর্বাধিক লঙ্ঘন” বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। যে ভিডিয়ো ফুটেজটি দেখানো হয়েছিল, তদন্তের স্বার্থে তাও চেয়ে পাঠিয়েছে আদালত। দক্ষিণ ত্রিপুরার পুলিশ সুপার কুলওয়ান্ত সিং জানান, পুলিশ ইতিমধ্যেই বেশ কিছু তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করেছে এবং কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান রেকর্ড করেছে। তার প্রেক্ষিতেই এখনও অবধি সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি জানতে ৩ মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন প্রধানমন্ত্রীর