নয়া দিল্লি : সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) ত্রিপুরার নির্বাচন (Tripura Civic Body Polls) সংক্রান্ত মামলার শুনানি হবে সোমবার। ত্রিপুরায় পৌর ভোটের নামে প্রহসন চলেছে, ছাপ্পা চলেছে। এই অভিযোগে গতকালই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল। ভোট গণনা স্থগিত রাখার আবেদন জানিয়েছিল তৃণমূল। তৃণমূলের অভিযোগে, ভোটারদের ভোট দিতে যাওয়া হয়নি।
তৃণমূলের তরফে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, ত্রিপুরায় অবাধ ও সুষ্ঠু পৌর নির্বাচনের আদেশ লঙ্ঘন করা হয়েছে। আদালতের নজরদারিতে তৈরি করা প্যানেল দ্বারা তদন্তের দাবি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আজ সংবিধান দিবসের জন্য সুপ্রিম কোর্টের স্বাভাবিক কার্যপ্রণালি বন্ধ রাখা হয়। আগামিকাল আদালত বন্ধ। তাই সোমবারই এই মামলার শুনানি হবে।
উল্লেখ্য, গতকাল ২৫ নভেম্বর ত্রিপুরায় পৌর ভোট ছিল। আর গতকাল সকাল থেকেই ভোটকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত ছিল ত্রিপুরা। অভিযোগ, আক্রান্ত হয়েছেন খোদ তৃণমূল প্রার্থীই। আগরতলার ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী তপন কুমার বিশ্বাসকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। তাঁর চোখে গুরুতর আঘাত লেগেছে। আগরতলার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী পদ্মা ভট্টাচার্যের ছেলে ধীমান ভট্টাচার্যকেও আক্রমণ করা হয়েছে। তাঁকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সকালেও আগরতলার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মক পোলিং চলাকালীন দুই তৃণমূলকর্মী আক্রান্ত হন। তাদের নাম কৃষ্ণ নুপুর মজুমদার ও মনোজ চক্রবর্তী। লাঠির আঘাতে তাদের মাথা ফেটে গিয়েছে বলে তৃণমূলের অভিযোগ।
ত্রিপুরায় বারংবার নির্বাচনী প্রচারে বাধা পাওয়ায় গত সপ্তাহেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ করে শীর্ষ আদালতের তরফে সেই আর্জি খারিজ করে বলা হয়েছিল, “গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোয় নির্বাচন স্থগিত রাখাটা একটি চরম পদক্ষেপ। যদি অন্য আর কোনও উপায় না থাকে, একমাত্র তাহলেই একেবারে শেষ উপায় হওয়া উচিত এটি।”
শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ পর্ব থেকে শুরু করে ফল ঘোষণা, গোটা প্রক্রিয়া যাতে নির্বিঘ্নে সম্পূর্ণ হয়, তা নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বাড়ানোর নির্দেশও দেওয়া হয় ত্রিপুরা পুলিশকে। কোনওরকম পক্ষপাতিত্ব না করে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ত্রিপুরা পুলিশকে। তৃণমূলের তরফে তাদের কর্মী ও দলীয় প্রার্থীরা প্রচারে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার যে অভিযোগ তো হচ্ছে, সেগুলিকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও রাজ্যে হিংসা না থামায়, আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে ত্রিপুরা সরকারের বিরুদ্ধে ফের আদালতের দ্বারস্থ হন তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব। গতকাল সেই সংক্রান্ত শুনানি শুরু হওয়ার পরই শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, “এই ধরনের পরিস্থিতিতে নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণভাবে হতে পারে, তার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে যত দ্রুত সম্ভব অতিরিক্ত দুই কম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। ২৮ নভেম্বর ভোট গণনা অবধি এই বাহিনী মোতায়েন থাকবে।”