Sukhoi 30: হামলা করতে হবে না, একটা সিগন্যালেই হবে ‘পঙ্গু’! বিরাট আবিষ্কার DRDO-র

Sukhoi 30: তারপর আসবে আরও একটা অ্যাডভান্সড Mk-3 ভ্যারিয়েন্ট। তার রেঞ্জ আরও বেশি হবে। দেড়শো কেজি ওজনের প্রায় ৪ মিটার লম্বা এই অস্ত্র মিসাইল, আমাদের বায়ুসেনার পাইলটদের জীবনের ঝুঁকিও কিন্তু অনেকটা কমিয়ে দিচ্ছে।

Sukhoi 30: হামলা করতে হবে না, একটা সিগন্যালেই হবে পঙ্গু! বিরাট আবিষ্কার DRDO-র
প্রতীকী ছবিImage Credit source: Getty Image

| Edited By: Avra Chattopadhyay

Jul 16, 2025 | 8:51 PM

নয়াদিল্লি: ওড়িশা উপকূলে সুখোই যুদ্ধবিমান থেকে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি অস্ত্র মিসাইলের সফল পরীক্ষা করল বায়ুসেনা। দু’টো আলাদা আলাদা কন্ডিশনে দু’বার মিসাইল ফায়ার করা হয়। দেখা গিয়েছে, দু’বারই আকাশে ভাসমান মুভিং অবজেক্টে ১০০ শতাংশ নিখুঁত হিট করেছে আমাদের অস্ত্র। যা কিনা তৈরি করেছে ডিআরডিও। যখন কোনও মিসাইল ফায়ার করা হবে, তখনই শত্রু দেশের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সেটাকে ট্র্যাক করে ইন্টারসেপ্ট করার চেষ্টা করবে। সেই জন্য ডিআরডিওর বিজ্ঞানীরা একটা দারুণ ব্যবস্থা করেছেন। অস্ত্র যখন আকাশে ছুটবে তখন সে নিজে থেকে সিগন্যাল পাঠিয়ে শত্রু রেডারকে অকেজো করে দেবে।

ফলে, মিসাইলকে বিনা বাধায় টার্গেটে হিট করাতে পাইলটের অসুবিধা হবে না। আপনারা যে ছবিটা দেখছেন এটা হল অস্ত্র মিসাইলের Mk-1 ভ্যারিয়েন্ট। পাল্লা ১০০ কিলোমিটার। ১৬০ কিলোমিটার পাল্লার Mk-2 ভ্যারিয়েন্ট তৈরি হয়ে গিয়েছে। পরীক্ষাটা খালি বাকি। আর তারপর আসবে আরও একটা অ্যাডভান্সড Mk-3 ভ্যারিয়েন্ট। তার রেঞ্জ আরও বেশি হবে। দেড়শো কেজি ওজনের প্রায় ৪ মিটার লম্বা এই অস্ত্র মিসাইল, আমাদের বায়ুসেনার পাইলটদের জীবনের ঝুঁকিও কিন্তু অনেকটা কমিয়ে দিচ্ছে।

কারণ, এটা হলো beyond visual range air-to-air missile, BVRAAM. মানে পাইলটের দৃষ্টিসীমার বাইরের টার্গেটেও আঘাত করতে সক্ষম। ফলে, লক্ষ্যে আঘাত করতে শত্রুর ডেরার কাছাকাছি বিমান নিয়ে যাওয়ার রিস্ক থাকছে না। ১০০-১৫০ কিলোমিটার দূর থেকেই কাজ হাসিল হয়ে যাচ্ছে। রাফাল এখন ভারতের হাতে থাকা সেরা যুদ্ধবিমান। তারপরেই সুখোই।

তবে রাফালে সব ধরনের মিসাইল ফিট করা যায় না। ফ্রান্সের কাছ থেকে কেনা বিমানে সে সুযোগ নেই। যা কিনা রাশিয়ার থেকে কেনা সুখোইয়ে আছে। ফলে অস্ত্র মিসাইল সুখোই-রেডি হয়ে যাওয়াটা আমাদের দেশের কাছে একটা বড় অ্যাচিভমেন্ট। এর আগে ডিআরডিওর চাঁদিপুর টেস্ট রেঞ্জে তেজস এমকে১ বিমান থেকেও অস্ত্র মিসাইল ছোঁড়া হয়েছিল।

লক্ষ্য ছিল, অনেক দূরের আকাশে চলমান অবস্থায় থাকা দ্রুতগতির কোনও অবজেক্ট। টার্গেট তেজসের পাইলটের দৃষ্টিসীমার বাইরে ছিল। তো বিমান থেকে ছুটে যাওয়া মিসাইল তখনও নিখুঁত লক্ষ্যে টার্গেটে হিট করে। মানে আমরা ২ বিমান থেকে একটাই মিসাইল ফায়ার করার সুযোগ পাচ্ছি। বিমান থেকে ছোঁড়ার সুবিধা থাকায় জরুরি পরিস্থিতিতে একে ট্রাকে চাপিয়ে লঞ্চিং প্যাডে নিয়ে যাওয়ার দরকারই নেই। আকাশ সুরক্ষার জন্য থ্রি-লেয়ার প্রোটেকশন

মেকানিজম তৈরি করছে ভারত। ত্রিস্তরীয় সুরক্ষা বলয়। ব্রহ্মস মিসাইলের উন্নত ভার্সনের পাশাপাশি সমর-২ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। সঙ্গে, বিয়ন্ড ভিসুয়াল রেঞ্জ এয়ার টু এয়ার মিসাইল, অস্ত্র। মানে ব্রহ্মস-সমর-অস্ত্রের যৌথ সুরক্ষা বলয়। এই তিনটের সব ক’টাই যে কোনও অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের মোকাবিলা করতে পারে। ব্রহ্মস দুনিয়ার যে কোনও যুদ্ধবিমানকেই টার্গেট করে ধ্বংস করতে পারে। আর দেখলেনই তো অস্ত্র মিসাইল আকাশে খুব দ্রুত শক্রকে চিহ্নিত করতে ওস্তাদ। যতটা খবর পাচ্ছি, অপারেশন সিঁদুরে মার খাওয়ার পর পাকিস্তান যেভাবে অস্ত্রসম্ভার বাড়ানোর চেষ্টা করছে, তার দিকে নজর রেখেই এইরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে।

রাশিয়া ও আমেরিকা এখন এই ধরনের ত্রিস্তরীয় সুরক্ষা বলয় ব্যবহার করে। ভারত এবার এই ক্লাবে ঢুকতে চলেছে। প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীরা বলছেন, অস্ত্র, ব্রহ্মস ও সমর-এর ইন্টিগ্রেশন করে তৈরি হবে নতুন আকাশ প্রতিরক্ষা বলয়। এই পর্বই সবচেয়ে কঠিন। তবে তিন অস্ত্রই ভারতে তৈরি। এদের খুঁটিনাটি প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীরা খুব ভালো করেই জানেন। তাই ইন্টিগ্রেশনে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি তেজসের মতো যুদ্ধবিমানের উল্টো পিঠটাই হলো দেশি প্রযুক্তিতে ডেভেলপ করা পরমাণু অস্ত্রবাহী মিসাইল। যেগুলো ডিফেন্সে দেশের শক্তি ও আত্মনির্ভরতার কথাই প্রমাণ করে। আশার কথা, যে তালিকা ক্রমশ লম্বা হচ্ছে।