নয়া দিল্লি: মধ্যরাতেই হ্য়াক হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী(Narendra Modi)-র ব্যক্তিগত টুইটার অ্যাকাউন্ট (Twitter Account)। ভারতে ক্রিপ্টোকারেন্সি (Crypto Currency) বৈধ বলে একটি টুইটও করা হয়েছিল। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের (PMO) নজরে পড়তেই টুইটার কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয় এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনা হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার বিবৃতি পেশ করল টুইটার (Twitter)।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমরা সর্বক্ষণ প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং প্রধানমন্ত্রীর অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক গতিবিধির খবর পেতেই আমাদের কর্মীরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে অ্যাকাউন্টটিকে সুরক্ষিত করা হয়েছে।” টুইটারের তরফে আরও জানানো হয়, তাদের প্রাথমিক তদন্তে অন্য কোনও অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া বা প্রভাবিত হওয়ার প্রমাণ মেলেনি।
রবিবার ভোরেই জানা যায় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর (PMO) সূত্রে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে, কিছু সময়ের জন্য অন্য কারোর হাতে অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ চলে গিয়েছিল। বর্তমানে সেই অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ ফেরত পাওয়া গিয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
শনিবার রাত ৩টে ১৮ মিনিট নাগাদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে একটি টুইট করা হয়। সেই টুইটে জানানো হয়, ভারতে বিটকয়েনকে বৈধ করে দেওয়া হচ্ছে। বিনামূল্যে দেশবাসীদের মধ্যে বিটকয়েন বিতরণ করা হবে বলেও দাবি করা হয়। একটি লিঙ্কও দেওয়া হয় বিচকয়েন সংগ্রহ করার জন্য।
ডিলিট করে দেওয়া ওই টুইটে বলা হয়েছিল, “আইনিভাবে দরপত্র (টেন্ডার) হিসাবে ভারতে বিটকয়েনকে স্বীকৃত করা হল। সরকার ৫০০ বিটকয়েন ক্রয় করেছে এবং তা দেশবাসীর মধ্য়ে বিতরণ করা হবে।”
মধ্যরাতে প্রধানমন্ত্রীর এই টুইট প্রায় তৎক্ষণাৎই নেটিজেনদের নজর কাড়ে। টুইটার জুড়ে এই পোস্টটি ভাইরাল হতেই প্রধানমন্ত্রীর দফতর গোটা বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারেন। তারা বুঝতে পারেন, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে গিয়েছে। এরপরই টুইটার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই টুইটার অ্যাকাউন্টটির নিয়ন্ত্রণ ফেরত পাওয়া সম্ভব হয়।
গোটা বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে এ দিন ভোরেই প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেও টুইট করা হয়। সেখানে বলা হয়, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর টুইটার অ্যাকাউন্ট কিছু সময়ের জন্য হ্যাক হয়েছিল। বিষয়টি টুইটার কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরা হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকাউন্টটিকে সুরক্ষিত করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে যে টুইট শেয়ার করা হয়েছে, তা উপেক্ষা করুন।”
হ্যাকাররা বিটকয়েন নিয়ে যে টুইটটি করেছিলেন, তা ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর টুইটার অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ ফেরত পাওয়ার পরই। তবে ইতিমধ্য়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার পর করা টুইটের স্ক্রিনশট। হ্যাশট্যাগ “হ্যাকড” লেখাও ট্রেন্ড করছে টুইটারে।
সূত্রের খবর, টুইটার কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সংস্থার অভ্যন্তরীণ সিস্টেমে কোনও সমস্যা বা হ্য়াকিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়নি। অর্থাৎ টুইটারের সিস্টেমের ভিতর দিয়ে নয়, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাকাউন্টকেই সরাসরি নিশানা বানানো হয়েছিল হ্যাকিংয়ের জন্য।
গতবছরও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ একাধিক দেশের শীর্ষ নেতাদের নিশানা বানিয়ে যে হ্যাকিং করা হয়েছিল, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি এইবার। গতবার সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং হামলা চালানো হয়েছিল, এবারের হামলায় কেবল প্রধানমন্ত্রীর অ্যাকাউন্টকেই হ্যাক করা হয়েছে। ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তির কম্পিউটার এমার্জেন্সি রেসপন্স টিমও হ্যাকিংয়ের উৎস খোঁজার চেষ্টা করছে।