নয়া দিল্লি: ‘সহৃদয় ডাকাত’, এ ছাড়া আর কিছু বলা যায় না। যাদের লুঠ করতে এসেছে, তাদেরই টাকা দিয়ে পালাচ্ছে ডাকাতরা, এমন কখনও শুনেছেন? অবিশ্বাস্য হলেও এটাই ঘটনা। সম্প্রতি পূর্ব দিল্লির শাহদারা এলাকার ফরশ বাজার এলাকার এক সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে এমনই এক বিচিত্র ঘটনা ধরা পড়েছে। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, পথ চলতি এক দম্পতিকে লুঠ করতে গিয়েছিল দুই ডাকাত। কিন্তু তারা দেখে, ওই দম্পতির কাছে সাকূল্যে ২০ টাকা পড়ে আছে। এরপরই, দরদি ডাকাতরা ওই দম্পতিকে ১০০ টাকার একটি নোট দিয়ে ওই এলাকা থেকে চম্পট দেয়। অভাবী দম্পতিকে অর্থ সহায়তা করলেও, বাকিরা ওই ডাকাতদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। ‘সহৃদয়’ ওই ডাকাতদের গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ।
এই বিরল ঘটনার একটি ভিডিয়ো ধরা পড়েছে স্থানীয় এক বাসিন্দার মোবাইল ক্যামেরায়। স্বাভাবিকভাবেই ফুটেজটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ৪৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, এক দম্পতির পথ আটকে দাঁড়িয়েছে স্কুটার আরোহী দুই ব্যক্তি। দুজনেরই মুখ হেলমেটে ঢাকা। আরোহীদের একজনকে দেখা যায়, ওই ব্যক্তির পকেটে হাত ঢুকিয়ে অর্থের সন্ধান করতে। কিন্তু, হতাশ হয়ে তাদের ফের স্কুটারে উঠতে দেখা যায়। সেই সময় ওই স্থানে আরও একটি স্কুটার এসে উপস্থিত হয়। এই সময় ডাকাতদের একজনকে দেখা যায় দম্পতির হাতে কিছু একটা দিতে। ওই দম্পতি পরে পুলিশকে জানিয়েছে, ডাকাতরা তাদের ১০০ টাকার একটি নোট দিয়েছিল। কারণ, তাঁর কাছে মাত্র ২০ টাকা ছিল। আর তাঁর সঙ্গে থাকা মহিলার পরণে যে গয়নাগুলি ছিল, সেগুলি ছিল নকল সোনার। ভিডিয়ো ফুটেজটি দেখে মনে হয় অন্য স্কুটার আরোহী ব্যক্তি, ডাকাতদের কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তবে, তাদের জবাবে সন্তুষ্ট হয়ে তিনি চলেও যান।
दिल्ली पुलिस की @DCP_SHAHDARA टीम ने 2 रोब्बेर्स को गिरफ्तार किया है ..जिनके पास से 30 मोबाइल फोन Recoverd हुए है .Robbers came and paid money to the victims coz he was not having money and jewellery of gf was fake as per robbers. Heavily drunk ? @DelhiPolice #Delhi pic.twitter.com/b6RrIOXU2Y
— Ravi Jalhotra (@ravijalhotra) June 25, 2023
এই ক্ষেত্রে ওই দুই ডাকাত বড় মনের পরিচয় দিলেও, তাদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু মোবাইল ফোন ও অন্য দামী জিনিস লুঠের অভিযোগ রয়েছে। নির্জন রাস্তায় পথ চলতি মানুষদের থামিয়ে তাদের লুঠ করত তারা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ডাকাতদের নাম দেব ভার্মা এবং হর্ষ রাজপূত। মজার বিষয় হল তারা দুজনেই বড় চাকরি করে। একটি বেসরকারি জিএসটি ফার্মে অ্যাকাউন্ট্যান্টের পদে আছেন দেব। অন্য একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন হর্ষ। তাদের দুজনকেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে। অন্তত ২০০টি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করে তাদের শনাক্ত করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৩০টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ। দেব এবং হর্ষ জানিয়েছে, গ্যাংস্টার নীরজ বাওয়ানার দলে সামিল হতে চেয়েছিল তারা। তার ইউটউব ভিডিয়ো দেখেই ডাকাতি শুরু করেছিল।
চাকরিরত দুই যুবক, কাদের সময়ের বাইরে ডাকাতি করতে বের হচ্ছে, মাফিয়া গ্যাংয়ে সামিল হতে চাইছে। আর যাদের লুঠ করতে যাচ্ছে, তাদেরতেই অর্থ সহায়তা দিতে হচ্ছে। আমাদের অর্থনীতিতে কী কোনও ফাঁক থেকে যাচ্ছে? এই ঘটনা কিন্তু ভাবনার খোরাক জোগাতে পারে অর্থনীতিবিদদের।