
মুম্বই: যা বালাসাহেব ঠাকরে পারেননি, তা করে দেখালেন দেবেন্দ্র ফড়ণবীস। এক মঞ্চে পাশাপাশি আনলেন দুই ভাই-কে। হিন্দি ভাষার আগ্রাসন রুখতে এবং মারাঠি ভাষা সংরক্ষণের লড়াইয়ের আজ মেগা র্যালির ডাক দিয়েছিলেন শিবসেনা (ইউবিটি)-র উদ্ধব ঠাকরে এবং মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার রাজ ঠাকরে। একসময়ে পারিবারিক বিবাদে আলাদা হয়ে যাওয়া দুই ভাই, ২০ বছর পর একসঙ্গে এক মঞ্চে এলেন। একইসঙ্গে দুই ভাই রাজনৈতিকভাবেও একজোট হতে চাওয়ার ইঙ্গিত দেন।
দুই দশক পর ঠাকরে পরিবারকে এক করার জন্য মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীসকেই কৃতিত্ব দিয়েছেন মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার প্রধান রাজ ঠাকরে। তিনি বলেন, “উদ্ধব ও আমি ২০ বছর পর একসঙ্গে হলাম…বালাসাহেব ঠাকরে যা করতে পারেননি, তা দেবেন্দ্র ফড়ণবীস করে দেখালেন।”
মারাঠি ভাষা রক্ষার দাবি তুলেই, রাজ্য সরকারের তিন ভাষা নীতির সমালোচনা করে রাজ ঠাকরে বলেন, “কেন বাচ্চাদের উপরে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে?”। উদ্ধব ঠাকরেও বলেন, “ভাষার প্রসঙ্গ এলে, রাজ, আমি এবং এখানের সকলে একজোট। হ্যাঁ, আমরা গুন্ডা। যদি সুবিচার পেতে গুন্ডা হতে হয়, তবে আমরা গুন্ডাগিরি করব।”
রাজ ঠাকরে বলেন, “আপনাদের ক্ষমতা হল ভোট। আমরা রাস্তায় ক্ষমতা রয়েছে। ওই সিদ্ধান্ত (তিন ভাষা নীতি) শিক্ষাবিদদের সঙ্গে কথা না বলেই নেওয়া হয়েছিল। যেহেতু ক্ষমতা রয়েছে, তাই যা খুশি চাপিয়ে দেওয়া যায় না।”
হিন্দি আগ্রাসনকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “হিন্দিভাষী রাজ্যগুলি আর্থিকভাবে পিছিয়ে রয়েছে। অ-হিন্দিভাষী রাজ্যে যাচ্ছে এই রাজ্যগুলির বাসিন্দারা যাচ্ছে। হিন্দি তাদের উন্নতিতে সাহায্য করল না কেন? যদি হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত চুপচাপ গ্রহণ করে নেওয়া হত, তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপই হত মহারাষ্ট্র থেকে মুম্বইকে আলাদা করে দেওয়া।”
প্রসঙ্গত, উদ্ধব ঠাকরে ও রাজ ঠাকরে আগে শিবসেনাতেই ছিলেন। বালাসাহেব ঠাকরে যখন শিবসেনার উত্তরসূরী হিসাবে উদ্ধব ঠাকরেকে বেছে নেন, তখন রাজ ঠাকরে আলাদা হয়ে যান এবং মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা তৈরি করেন। এতদিনে কোনও ইস্যুতেই উদ্ধব ও রাজ একজোট হননি, তবে এবার তিন ভাষা নিয়ম নিয়েই এক মঞ্চে এলেন দুই ভাই।
সম্প্রতিই মহারাষ্ট্র সরকার তিন ভাষা নিয়ম জারি করার প্রচেষ্টা করেছিল। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি বাধ্যতামূলক করার নিয়ম প্রস্তাব করা হয়েছিল, কিন্তু বিতর্কের মুখে পড়েই সরকার এই সিদ্ধান্ত আপাতত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে।