নয়া দিল্লি: এক করোনায় রক্ষে নেই। দোসর হয়ে দেশে হু-হু করে ছড়াচ্ছে মিউকরমাইকোসিস সংক্রমণ। করোনা থেকে সেরে উঠতে না উঠতেই একাধিক রোগীর শরীরে একপ্রকার কালো ছত্রাকের প্রভাব দেখা যাচ্ছে, যা অনেকাংশে বেশি প্রাণঘাতী হিসেবে প্রমাণিত হচ্ছে। শনিবার পর্যন্ত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সূত্র মারফৎ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গোটা দেশে এখনও পর্যন্ত এই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে ২৩ হাজারের বেশি মানুষআক্রান্ত হয়েছেন। ঠিক কী কারণে এই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তা নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি ছিল। তবে এ দিন কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, কোভিডে আক্রান্ত রোগীদের উপর স্টেরয়েডের অযৌক্তিক এবং অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণ বাড়াতে সাহায্য করছে।
শনিবার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে স্পষ্ট করে বলা হয়, এই সংক্রমণ ছড়ানোর পিছনে স্টেরয়েডের বড় ভূমিকা রয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন নীতি আয়োগের সদস্য তথা প্রথিতযশা চিকিৎসক ভিকে পাল। তিনি বলেন, “স্টেরয়েড এক এমন কার্যকরি ড্রাগ যা প্রাণ বাঁচাতে সাহায্য করে। কিন্তু সময়ের আগেই তা কোভিড রোগীদের দেওয়া, প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ব্যবহার করা, এবং যেখানে প্রয়োজন নেই সেই ক্ষেত্রে তা প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।” তাঁর পরামর্শ, চিকিৎসকেরা যেন কোনও রোগীকে স্টেরয়েড দেওয়া আগে নিশ্চিত হন যে কতটা ডোজ় দিতে হবে এবং কোন সময়ে সেটা দেওয়া প্রয়োজন।
ভিকে পালের কথায়, “যখন অযৌক্তিকভাবে স্টেরয়েড দেওয়া হয়, তখন রোগীকে বাঁচিয়ে তোলার পরিবর্তে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করে। সেই নেতিবাচক প্রভাবগুলির মধ্যেই একটিকে আমরা এখন ব্ল্যাক ফাঙ্গাস হিসেবে দেখতে পাচ্ছি। স্টেরয়েডের এহেন ব্যবহার ডায়বেটিক রোগীদের সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলছে।”
আরও পড়ুন: একটানা মাথা ব্যাথা! মিউকরমাইকোসিসের উপসর্গ সম্পর্কে সচেতন করলেন এইমস প্রধান
তবে কি কোভিড চিকিৎসায় স্টেরয়েডের ব্যবহার বন্ধ করা উচিত চিকিৎসকদের? ভিকে পাল বলছেন, “তা কখনই নয়। স্টেরয়েড একটা জীবনদায়ী ড্রাগ। বহু রোগীর প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম। কিন্তু এর অনিয়ন্ত্রিত এবং ভুল ব্যবহার আমাদের আরও বেশি করে মিউকরমাইকোসিসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।” যদিও তিনি সাফ করে দিয়েছেন, করোনার কারণে এই নতুন রোগের উদ্ভাবন হয়নি। কোভিডের জন্ম হওয়ার আগেও মিউকরমাইকোসিসের অস্তিত্ব ছিল। তবে এটি একটি বিরল রোগ যা ডায়বেটিকদের সহজে আক্রমণ করে। কোভিডের কারণে এর সূচনা হয়নি।
আরও পড়ুন: করোনা বিধ্বস্ত বিশ্বে আশার আলো, নয়া অ্যান্টিভাইরাল থেরাপি আবিষ্কার করলেন বিজ্ঞানীরা