বেঙ্গালুরু: সোমবার রাতে বেঙ্গালুরুর স্যার এম বিশ্বেশ্বরায় টার্মিনাল বা এসভিএমটি রেলওয়ে স্টেশনে একটি প্লাস্টিকের ড্রামের মধ্য থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক অজ্ঞাত মহিলার দেহ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে মৃত মহিলার বয়স আনুমানিক ৩১ থেকে ৩৫ বছর। দেহটি একটি কাপড়ে মোড়ানো ছিল। ওই অবস্থায় সেটি একটি মুখবন্ধ প্লাস্টিকের ড্রামে ভরা ছিল। এখনও ওই মহিলার পরিচয় জানা যায়নি। তদন্ত চলছে। উল্লেখ্য, এই নিয়ে গত তিন মাসে বেঙ্গালুরুতে একই রকম পরিস্থিতিতে তৃতীয় অজ্ঞাত পরিচয় মহিলার দেহ উদ্ধার হল।
সূত্রের খবর, রেলস্টেশনের প্রবেশপথের কাছেই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল দেহ ভরা ড্রামটি। তার ঠাকনাটি খুলতেই ওই মহিলার দেহ পাওয়া যায়। পুলিশের সন্দেহ, মৃতদেহটি মছলিপত্তনম থেকে ট্রেনে করে আনা হয়েছিল বীপা স্টেশনে। সেখান থেকে একটি অটোরিকশায় করে তিনজন ব্যক্তি ড্রামটি এসভিএমটি-তে নিয়ে আসে। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে অটোরিকশায় ওই তিন ব্যক্তিকে ড্রামটি বয়ে আনতে দেখা গিয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রেলওয়ে পুলিশ সুপার সৌম্যলতা। ওই সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে অপরাধীদের শনাক্ত করার পাশাপাশি মৃত মহিলার পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। কর্ণাটকের পাশাপাশি অনুসন্ধান চানো হচ্ছে এবং অন্ধ্র প্রদেশেও। কিন্তু এখনও মৃত মহিলা এবং মৃতদেহ যারা ফেলেছিল, তাদের পরিচয় বের করা যায়নি।
তবে, এই ঘটনার পিছনে কোনও সিরিয়াল কিলার থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। বস্তুত, এই নিয়ে কর্নাটকে গত তিন মাসে একই পরিস্থিতিতে তিনটি দেহ উদ্ধার করা হল। তিনটি ক্ষেত্রেই যুবতী মহিলাদের হত্যা করে, কাপড়ে মুড়ে এবং ড্রামে ভরে দেহটি রেলস্টেশনে ফেলে যাওয়া হয়েছে। সিরিয়াল কিলার তত্ত্ব সম্পর্কে পুলিশ এখনও নিশ্চিত নয়, তবে সন্দেহ ক্রমে জোরাল হচ্ছে। হত্যাগুলির মধ্যে কোনও যোগসূত্র আছে কিনা, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
প্রথম ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। মেমু ট্রেনে বস্তায় মোড়ানো এক মহিলার দেহ পাওয়া গিয়েছিল। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি। বেঙ্গালুরুর যশোবন্তপুর রেলস্টেশনে, একই রকম দেখতে নীল রঙের এক প্লাস্টিকের ড্রামে এক অজ্ঞাত পরিচয় মহিলার পচা গলা দেহ পাওয়া গিয়েছিল। তদন্তে পুলিশ জেনেছিল হত্যার সময় ওই মহিলার বয়স ছিল প্রায় ৩০ বছর। এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে, ওই মহিলা অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা। তিনটি ঘটনার মধ্যে অত্যন্ত মিল থাকায় ওই তিনটি ঘটনার পিছনে কোনও এক ব্যক্তিই আছে বলে সন্দেহ করছে পুলিশের। আপাতত, পুলিশের অগ্রাধিকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যাওয়া ওই তিন ব্যক্তিকে আটক করা। তাদের জেরা করলেই তিনটি হত্যা মামলারই কিনারা করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।