নয়া দিল্লি: ফের একবার করোনা কাঁটা। চিন, জাপান, আমেরিকা সহ একাধিক দেশে ফের মাথা চাড়া দিচ্ছে করোনা সংক্রমণ। আর নতুন করে যাতে করোনার প্রভাবে দেশের নাগরিকদের জনজীবনে না পড়ে এবং অর্থনীতি ফের একবার ধসে না যায় তাই প্রথম থেকেই তা শক্ত হাতে দমন করার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। ইতিমধ্য়েই দেশে ওমিক্রনের সাব ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭ -র হদিশ মিলেছে। মূলত এই ভ্যারিয়েন্টের কারণেই ফের করোনা সংক্রমণের চোখ রাঙানি বেড়েছে। এই আবহে সতর্কতামূলক পদক্ষেপের করার জন্য দফায় দফায় বৈঠকে বসছে কেন্দ্র। সেইমতো শুক্রবার বিভিন্ন রাজ্য়ের স্বাস্থ্য়মন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। এই বৈঠকে বিভিন্ন রাজ্যে যথাযথ করোনাবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর,সকল রাজ্যগুলিকে মূলত চারটি বিষয়ের উপর জোর দিতে বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। নমুনা পরীক্ষা, ট্র্য়াকিং, চিকিৎসা ও টিকাকরণ (Test-Track-Treat and Vaccination)। এদিন কোভিড পরিস্থিতি এবং তার জন্য রাজ্যের কী প্রস্তুতি তা নিয়ে সব রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন মাণ্ডব্য। সব রাজ্যগুলিকে নমুনা পরীক্ষা ও টিকাকরণের ক্ষেত্রে জোর দিতে বলা হয়েছে এই বৈঠকে।
এদিকে সামনেই ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন, নিউ ইয়ার রয়েছে। আরও একবার উদযাপনের মেজাজে গা ভাসাবে সকলেই। এই উৎসবের ভিড়ের ফাঁকে করোনা যাতে কোনওভাবে নিঃশ্বাস ফেলতে না পারে তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এই বৈঠকে মাণ্ডব্য বলেছেন, ‘নমুনা পরীক্ষা, ট্র্য়াকিং, চিকিৎসা ও টিকাকরণ এবং কোভিড সংক্রমণ ঠেকাতে যেসব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলি নেওয়া দরকার তা নিতে হবে। নজরদারি বাড়াতে, নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়াতে এবং হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে রাজ্যগুলিকে।’ এছাড়াও মাস্ক পরা, হাত স্যানিটাইজ করা, শারীরিক দূরত্ববিধি মেনে চলার মতো প্রাথমিক বিষয়গুলি মেনে চলতে বলা হয়েছে।
এদিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনের বৈঠকে রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক সচিব এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। নবান্ন সূত্রে খবর, এই বৈঠকে প্রস্তাব দেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। দেশের নাগরিকদের ইতিমধ্যেই যে টিকা দেওয়া হয়েছে তা কোভিডের নয়া ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭ এর বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে তা খতিয়ে দেখার প্রস্তাব দেন তিনি। করোনা পরিস্থিতি সামলানোর জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সম্পূর্ণভাবে তৈরি বলে তিনি বৈঠকে দাবি করেন। এমনকি ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তিনি নিজে বৈঠক করেছেন বলেও জানিয়েছেন এ দিনের বৈঠকে । প্রসঙ্গত, এর আগে স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তারপর দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করতে গতকাল বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর আজ রাজ্য়গুলির সঙ্গে বৈঠক করলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে এক সপ্তাহে তিনটি বৈঠক করল কেন্দ্র।