নয়া দিল্লি: দেশে সংক্রমণের রেখা একটি সমতলে পৌঁছলেও চিন্তা বাড়াচ্ছে দক্ষিণের রাজ্যগুলি। সেখানে ক্রমশ বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ (COVID-19)। একইসঙ্গে বাড়ছে ওমিক্রনের (Omicron) দাপটও। এই পরিস্থিতিতেই উদ্বেগজনক রাজ্যগুলিকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য (Mansukh Mandaviya)। দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য সেই রাজ্যগুলির স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ওমিক্রন রুখতে কী কী স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হচ্ছে, সেই দিকগুলিও খতিয়ে দেখবেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুর আড়াইটের সময় ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই বৈঠক হবে। দক্ষিণ ভারতের একাধিক রাজ্য, যেমন অন্ধ্র প্রদেশ, কর্নাটক, কেরল, তেলঙ্গনা, লাক্ষাদ্বীপ, তামিলনাড়ু, পুদুচেরী ও আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আধিকারিকদের এই ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দিতে বলা হয়েছে। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির স্বাস্থ্য আধিকারিকরাও এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গিয়েছে।
বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ব্যাপক হারে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে দক্ষিণ ভারতে। কেরলে বৃহস্পতিবারই নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ৪৯ হাজার ৭৭১ জন। সে রাজ্যে একদিনেই করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ১৪০ জনের। এই নিয়ে মোট আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৫৭ লক্ষ ৭৪ হাজার ৮৫৭ ও ৫২ হাজার ২৮১-তে।
তামিলনাড়ুতেও বৃহস্পতিবার নতুন করে ২৯ হাজার ৯৭৬ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। এই নিয়ে সে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩২ লক্ষ ২৪ হাজার ২৩৬-এ বেড়ে দাঁড়িয়েছে। অন্ধ্র প্রদেশ, কর্নাটকেও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে সংক্রমণের হার। সেই কারণেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই সমস্ত রাজ্যগুলির স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন আজ।
এর আগে মঙ্গলবারই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী উত্তর ভারতের ৯টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বৈঠকে বসেছিলেন। সেই বৈঠকে তিনি করোনা পরীক্ষা ও টিকাকরণের তথ্যের আপডেট যাতে নিয়মিত কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হয়, সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন। যে রাজ্যগুলিতে করোনা সংক্রমণ নিম্নমুখী, সেখানেও আরটি-পিসিআর পরীক্ষা বাড়ানোর কথা বলেন তিনি।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে বাড়িতেই একান্তবাসে থাকার যে নয়া নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে, তা যেন যথাযথভাবে পালন হয়, সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন রাজ্যগুলিকে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “সঠিক নজরদারি থাকলে, যারা বাড়িতেই আইসোলেশনে রয়েছেন, তারা সময় অনুযায়ী যথাযথ চিকিৎসা পরিষেবা পাবেন।”
একইসঙ্গে তিনি করোনার ক্লাস্টার ও হটস্পটগুলি নিয়েও অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন। যে সমস্ত এলাকায় সংক্রমণ বাড়ছে, সেগুলিকে হটস্পট ঘোষণা করে যাতায়াত সীমাবদ্ধ করলে সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। হাসপাতালে ভর্তির হার ও সংক্রমণের কারণে মৃত্যুর সংখ্যার উপরও বিশেষ নজর দিতে বলেন তিনি। করোনা মোকাবিলায় “টেস্ট-ট্রাক-ট্রিট”-র নীতি এবং করোনা টিকাকরণ ও করোনাবিধি মেনে চলার উপরই জোর দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাণ্ডব্য।