Amit Shah On Gujarat Riot : মোদী ১৯ বছর ধরে নীরবে সহ্য করছেন, আজ সরব হলেন শাহ
Amit Shah On Gujarat Riot : গতকাল ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গায় নরেন্দ্র মোদীকে ক্লিন চিট দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এদিন সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ জানিয়েছেন, ১৯ বছর ধরে ভুয়ো অভিযোগ নীরবে সহ্য করে গিয়েছেন মোদীজি।
নয়া দিল্লি : ২০০২ সালের গুজরাটে হিংসার ঘটনা ঘটে। তখন সেখানে মুখ্যমন্ত্রী পদে রয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তখন জ্বলছে গুজরাট। রাজনৈতিক মোড় নিয়েছিল সেই ঘটনা। বিরোধীরা সেখানে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করেছিলেন। এই গুজরাট মামলায় একাধিকবার ক্লিন চিট দিয়েছে বিভিন্ন আদালত ও তদন্ত কমিশন। এবার গতকাল আরও একবার গুজরাট দাঙ্গার মামলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ক্লিনচিট দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপরই সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাতকারে অমিত শাহ গুজরাট দাঙ্গা নিয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি এদিন জানিয়েছেন, গত ১৯ বছর ধরে নীরবে সব ভুয়ো অভিযোগ সহ্য করেছেন নরেন্দ্র মোদী।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘মোদীজি ১৯ বছর ধরে ভুয়ো অভিযোগ নীরবে সহ্য করে গিয়েছেন। ভগবান শঙ্করের বিষপানের মতো সব ভুয়ো অভিযোগ নীরবে সহ্য করেছেন মোদীজি।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘মোদীরও জিজ্ঞাসাবাদ হয়েছিল। কেউ ধর্না প্রদর্শন করেনি। দেশ জুড়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ হয়নি। আমরা দেশের আইনকে সাহায্য করেছি। আমারও গ্রেফতার হয়েছিল। কিন্তু বিক্ষোভ দেখাইনি। এত বড়় লড়াইয়ের পর কেউ যখন বাইরে আসে অপরাধমুক্ত হয়ে তখন সোনার থেকেও তাঁর চমক বেশি হয়। যাঁরা মোদীজিকে দোষারোপ করেছিল তাঁদের মোদীজির ও বিজেপির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত। ‘ তিনি ধর্না প্রদর্শনের প্রসঙ্গ তুলে কার্যত রাহুল গান্ধীকে নিশানা করলেন। উল্লেখ্য, সম্প্রতি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ইডি জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে দেশ জুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে সামিল হন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা ও কর্মীরা। তাঁদের সত্যাগ্রহ মিছিল নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজধানীর রাস্তা। এবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নিশানায় কংগ্রেস। তিনি ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গার তদন্তে মোদীর জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেসকে নীতি শিক্ষা দিলেন। তিনি এদিন বলেছেন, ‘মোদী জির উপর আরোপিত সব ভুয়ো অভিযোগ সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এটাও জানিয়েছে যে, রাজনৈতিকভাবে উস্কানি দেওয়া হয়েছে। বিজেপির সরকারের উপর যে দাগ লেগেছিল তা মুছে গিয়েছে। লোকতন্ত্রের মধ্যে সংবিধানের সম্মান কীভাবে করতে হয় তার একটি আদর্শ উদাহরণ সব রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের কাছে রেখেছেন নরেন্দ্র মোদী।’
২০০২ সালে গুজরাটের দাঙ্গার ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল গোধরায় একটি তীর্থযাত্রী বোঝাই ট্রেনে আগুন লেগে দেওয়া থেকেই সূচনা হয়েছিল। সেই ঘটনায় ৬০ জনের মৃত্যু হয়। তারপরই আরও হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। এদিন অমিত শাহ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘৬০ জনকে জ্যান্ত পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই ঘটনায় জনগণের মধ্যে আক্রোশ তৈরি হয়েছিল। সেই সময় সংসদের অধিবেশন চলছিল। কিন্তু কেউ কোনও নিন্দা করেনি। এত বড় ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি!’
গুজরাট দাঙ্গায় অনেক অভিযোগ উঠেছিল প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে। সেই সময় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে শুরু হয় তদন্ত। SIT-র তলবে হাজিরা দেন প্রধানমন্ত্রী। ৯ ঘণ্টারও বেশি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল তাঁকে। তবে আদালতের নির্দেশে নরেন্দ্র মোদী সহ ৫৮ জনকে ক্লিনচিট দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই সিদ্ধান্তকে পুনর্বিবেচনা করে ফের তদন্তের আবেদন জানিয়েছিলেন দাঙ্গায় নিহত কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরির স্ত্রী জাকিয়া। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। গতকাল আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে এই মামলাটি সাজানোর জন্য অর্থ প্রদান করা হয়েছিল। গতকাল দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ‘গত ১৬ বছর ধরে বিষয়টি জিগিয়ে রাখার জন্য স্পষ্টতই উল্টো নকশার কার্যধারা চালানো হয়েছে। যারা এই ধরনের আইনের অপব্যবহারের সঙ্গে জড়িত, তাঁদের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।’ সুপ্রিম কোর্টের তিনশো পাতার সেই রায়ের উল্লেখ করে এদিন অমিত শাহ বলেছেন, ‘শুধু আমরা নই, সুপ্রিম কোর্টও এটা মেনে নিয়েছে গুজরাটকে কলঙ্কিত করার জন্য এইসব অভিযোগ করা হয়েছে।’