নয়া দিল্লি: আগামী ৫ বছরে ভারত বৃহৎ সেমিকন্ডাক্টর (Semiconductor) প্রস্তুতকারক দেশ হতে চলেছে। বললেন কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। শুধু তাই নয়, গোটা বিশ্বে সেমিকন্ড্রাক্টর চিপ উৎপাদনে ভারত নেতৃত্ব দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে বলেও জানান তিনি (Ashwini Vaishnaw)। সেমিকন্ড্রাক্টর চিপ কীভাবে উৎপাদিত হবে এবং ভারত কীভাবে সেমিকন্ডাক্টর প্রস্তুতকারক দেশ হয়ে উঠবে, সে ব্যাপারে সহজ উদাহরণ তুলে ধরে জাতীয় সংবাদ সংস্থা ‘ব্রুট’-এ একটি ভিডিয়ো বার্তাও দিয়েছেন অশ্বিনী বৈষ্ণব।
‘ব্রুট’-এ দেওয়া ভিডিয়ো বার্তায় চিপ তৈরির প্রক্রিয়া তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। চিপ ইন্ডাস্ট্রিকে ‘ওয়েফার’ নাম দিয়ে তিনি জানান, যেভাবে আলুকে পাতলা করে টুকরো টুকরো করে কাটা হয়, তেমনই বিশাল সিলিকনের অংশ টুকরো টুকরো করে কেটে ওয়েফারের মতো করে তার থেকে চিপ তৈরি করা হয়। খুব সূক্ষ্মভাবে প্লাজমা, লেজার ইত্যাদি দিয়ে ওয়েফারের উপর চিপ তৈরি হবে। তারপর সেটি থেকে চিপ বের করা খুবই জটিল প্রক্রিয়া। কারণ, এর চারপাশে তার মোড়া থাকে এবং তার মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহও করতে হবে।
চিপ সম্পর্কে মন্ত্রী আরও জানান, একটি ক্ষুদ্র মাইক্রোচিপ… এর চারপাশে কয়েক কিলোমিটার তারের রিং দিয়ে মোড়া থাকে। ঠিক যেমন একটি পাঁচ বা ছয়তলা বিল্ডিংয়ের জন্য সিঁড়ি, লিফট, বিদ্যুৎ সরবরাহ, জল সরবাহ ইত্যাদির মতো অনেক ধরনের সংযোগ রয়েছে, তেমনই এই ছোট চিপটিতে পাঁচটি তলা লুকিয়ে আছে। এই চিপের বেশিরভাগই ভারতে উৎপাদিত হবে বলে জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, আইপ্যাড, ট্যাবলেট, ট্রেন সেট, অটোমোবাইল, গাড়ি ইত্যাদির জন্য ছোট আকারের মাইক্রোচিপ ব্যবহার করা হয় এবং সেগুলি বর্তমানে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে ভারত। এগুলি ভারতে উৎপাদিত হলে দাম কমে যাবে বলে জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, “সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক্স, টেলিকম ইকুইপমেন্ট এবং অটোমোবাইল খাতের বিকাশ ঘটবে। এর ফলে সেমিকন্ডাক্টর সেক্টরে তরুণদের চাকরির সুযোগ বাড়বে।”
সম্প্রতি বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে চিনকে টেক্কা দেবে ভারত। সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের মাধ্যমে এটি সম্ভব বলে আশাবাদী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তিনি বলেন, “এই সেমিকন্ডাক্টর সেক্টরটি দ্রুতহারে এগিয়ে চলেছে। বর্তমানে সারা বিশ্বে এর বাজারমূল্য ৬৫০ বিলিয়ন ডলার। আগামী ছয়-সাত বছরের মধ্যে এই মূল্য প্রায় দ্বিগুণ হবে। এই শিল্পের বাজার দখল করার ক্ষেত্রে ভারতের এটাই সঠিক সময়। এর কারণ ব্যাখ্যা করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, “গোটা বিশ্ব ভারতকে বিশ্বাস করে। অন্য দেশগুলো আমাদের বিদেশ নীতিকে বিশ্বাস করে। আমাদের বৃহৎ গণতন্ত্র রয়েছে। আমাদের মুক্ত ও স্বচ্ছ নীতি কাঠামো রয়েছে। তাই গোটা বিশ্ব আমাদের এখানে এসে উৎপাদন করতে চায়। তাই আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে, আগামী পাঁচ বছরে ভারত একটি বড় সেমিকন্ডাক্টর প্রস্তুতকারক দেশ হতে চলেছে এবং বিশ্বের বৃহৎ অংশের গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বাসযোগ্য অংশীদারি হতে চলেছে।”