
নয়া দিল্লি: ইরান-ইজরায়েলের সংঘাত ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এক সপ্তাহ পার হয়ে গিয়েছে, যুদ্ধের আঁচ কমার কোনও লক্ষণই নেই। এই সংঘাত নিয়ে বাকি দেশের চিন্তা একটাই, তেলের দাম বেড়ে যাবে। অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়লে, পেট্রোল-ডিজেল থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বাড়বে। ভারতেও কি একই পরিস্থিতি হবে? উত্তর দিলেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীর কথায়, ভারতে তেলের জোগানে কোনও টান পড়েনি। বিশ্ব বাজারে তৈলজাত পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
১৩ জুন থেকে সংঘাত শুরু হয়েছে ইরান-ইজরায়েলের। দুই দেশই একে অপরের উপরে লাগাতার গোলাবর্ষণ করে চলেছে। বিশেষজ্ঞ থেকে সাধারণ মানুষের একটাই আশঙ্কা, মধ্য প্রাচ্যের এই সংঘাতে তেলের দাম বাড়বে। তবে এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এক সাক্ষাৎকারে জানান, বর্তমানে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।
হরদীপ সিং পুরী বলেন, “সরকার আত্মবিশ্বাসী যে আমরা এই অস্থির সময়ের মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসতে পারব। এখনও তেলের দাম নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। বিশ্বের কোথাও তেলের ঘাটতি দেখা দেয়নি। সংঘাতের সময়ে এই ধরনের রটনায় কান না দেওয়াই উচিত। আমরা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছি।”
বর্তমানে ভারতে অপরিশোধিত তেলের দাম লিটার প্রতি ৭৬ টাকা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, এই দাম মোটেও উদ্বেগজনক নয়। তিনি বলেন, “মধ্য প্রাচ্যের সংঘাত শুরুর পরই অনেকের আশঙ্কা ছিল তেলের দাম ১০০-র গণ্ডি পার করে যাবে। বিগত কয়েক মাসে তেলের দাম ৭৫ টাকার রেঞ্জেই রয়েছে। কিছুদিন আগেই ব্যারেল প্রতি তেলের দাম ১০২ মিলিয়ন ডলার ছিল। পশ্চিমের দেশ যেমন আমেরিকা, কানাডা থেকে তেল আসছে।”
প্রসঙ্গত, ইরান বছরে ১৫৭ বিলিয়ন ব্যারেল ক্রুড তেল উৎপাদন করে, যা মধ্য প্রাচ্যের ২৪ শতাংশ এবং গোটা বিশ্বের ১২ শতাংশ তেলোর চাহিদা পূরণ করে। বিশ্বের নবম বৃহত্তম তেল উৎপাদক দেশ ইরান। দৈনিক ৩.৩ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উৎপাদন করে, যার মধ্যে ২ মিলিয়ন ব্যারেল ক্রুড ও রিফাইনড তেল বিদেশে রফতানি করা হয়।
ভারত তেলের ক্ষেত্রে ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশই বিদেশি আমদানির উপরে নির্ভরশীল। ফলে তেলের উৎপাদন বা রফতানিতে প্রভাব পড়লে, তেলের দামও চড়চড়িয়ে বাড়বে। যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, যেহেতু ভারত ইরান বাদেও একাধিক দেশ থেকে তেল আমদানি করে, তাই জোগানে ঘাটতি পড়বে না।