
প্রয়াগরাজের জিরো রোড অঞ্চলের চাহচাঁদ গলির বাসিন্দা খুন্তি গুরু। ২৯ জানুয়ারি প্রয়াগরাজে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার পর থেকেই আর কোনও খোঁজ মেলেনি খুন্তির। খবরে জানা যায়, ২৯ জানুয়ারি মহাকুম্ভে ঘটে যাওয়া সেই মর্মান্তিক ঘটনার যে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছিল তার মধ্যে একজন ছিলেন প্রয়াগরাজের চাহচাঁদ গলির খুন্তি গুরুও।
হিন্দু শাস্ত্র মতে কেউ মারা গেলে ১২ দিনের মাথায় ঘাট কাজ সম্পন্ন করে, আত্মার শান্তি কামনায় ১৩ দিনে শ্রাদ্ধ শান্তি করতে হয়। হিন্দিতে তাকেই ‘তেরভি’ বলে। সেই মতোই বাড়িতে চলচিল শ্রাদ্ধের কাজ। কিন্তু তারপরে যা ঘটে, তাতে কপালে ওঠে চোখ।
শ্রাদ্ধ চলার সময় বাড়িতে ফিরে আসেন খুন্তি। বাড়িতে ফিরে দেখেন ভর্তি আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী। তাঁরই শ্রাদ্ধের আয়জন করা হয়েছে। খুন্তিকে দেখে চমকে যান বাকিরাও।
কোথায় ছিলেন তিনি? সেই প্রশ্নের উত্তরেই আর অবাক হয়েছেন সকলে। খুন্তি জানান, তিনি নাকি মহাকুম্ভে আসা সাধুসন্তদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছিলেন। এমনকি ছিলিম সেবন করেন তিনি, তারপরে সময়ের হিসাব হারিয়ে ফেলেছিলেন খুন্তি। প্রায় দু’সপ্তাহ পরে, তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। যদিও তাঁর পরিবার যে ইতিমধ্যেই তাঁর শ্রাদ্ধ শান্তির ব্যবস্থা করেছে তা ভাবতে পারেননি খুন্তি।
জানা যায়, দু’সপ্তাহ পর বাড়ি ফিরে রিকশা থেকে নেমে বারির সামনে ভিড় দেখে হাসিমুখে খুন্তি জিজ্ঞেস করেছিল, “তোমরা কী করছো?” খুন্তির প্রশ্ন শুনে তাঁর দিকে ফিরেই স্তব্ধ হয়ে যান বাকিরা। সমাজকর্মী আভাই অবস্থি জানান, ২৮ জানুয়ারি সন্ধেবেলা বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় গুরু বলে গিয়েছিলেন তিনি মৌনী অমাবস্যায় সঙ্গমে স্নান করতে যাচ্ছেন। সেই শেষ তারপর আর কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
পরের দিন সকালে পদপৃষ্ঠ হওয়ার খবর পাওয়ার পরে শুরু হয় গুরুর খোঁজ। কিন্তু অনেক চেষ্টার পরেও তাঁর কোনও খবর পাওয়া যায়নি। শেষে প্রতিবেশীরা সকলে ধরে নেন খুন্তি হয়তো পদদলিত হয়ে মারা গিয়েছেন। সেই মতোই নিয়ম মেনে খুন্তির শান্তি সংস্থানের ব্যবস্থা করে তাঁরা। এরপরেই ১৩ দিন পরে নিজের শ্রাদ্ধের সময় ফিরে আসেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২৯শে জানুয়ারি, উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভ মেলায় পদদলিত হয়ে ৩০ জন নিহত এবং ৬০ জন আহত হন। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এক বিবৃতিতে জানান, মৌনী অমাবস্যার জন্য মেলায় বিপুল সংখ্যক মানুষের আগমন এবং সঙ্গে সঙ্গমে স্নান করতে আসায় অভিভূত প্রশাসন।