লখনউ: প্রমাণ সাজানোর গুরুতর অভিযোগ উঠল উত্তর প্রদেশ মিরাট শহরের স্থানীয় পুলিশের বিরুদ্ধে। মিরাটের এক পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের ছেলের বাইকে একটি বন্দুক লুকিয়ে রেখেছিল পুলিশই। পরে, আবার তারাই এসে অবৈধভাবে বন্দুক রাখার অভিযোগে, অস্ত্র আইনে তাদের ছেলেকে গ্রেফতর করে নিয়ে গিয়েছে। শুধু ফাঁকা অভিযোগই নয়, অভিযোগের সপক্ষে ওই পরিবার একটি সিসিটিভি ফুটেজও দাখিল করেছে। সেই সিসিটিভি ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর ভিডিয়োটি ভাইরাল হতেই, এই অভিযোগ নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে উত্তর প্রদেশের পুলিশ মহলে।
সূত্রের খবর, একটি জমির দখল নিয়ে, অশোক ত্যাগী নামে মিরাটের জনৈক ব্যক্তির সঙ্গে ওই শহরেরই আরও এক ব্যক্তির বিবাদ চলছে। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর), স্থানীয় খারখাউদা থানার পুলিশের একটি দল এসে হানা দেয় তাদের বাড়িতে। অশোক ত্যাগীর ছেলে, অঙ্কিতকে বেআইনি অস্ত্র রাখার অভিযোগে গ্রেফতার করে তারা। এরপরই, অঙ্কিতের মা রাখি ত্যাগী পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রমাণ সাজানোর অভিযোগ করেন। রাখীর দাবি, তাঁদের বাড়িতে বা তাঁর ছেলের বাইকে কোনও বন্দুক ছিল না। পুলিশি অভিযানের আগে, পুলিশেরই আরও একটি দল এসে ওই বন্দুকটি রেখে গিয়েছিল।
রাখি ত্যাগী যে সিসিটিভি ভিডিয়োটি প্রকাশ করেছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে, একদল পুলিশ অফিসার ত্যাগী পরিবারের বাড়িতে ঢুকছে। তাগের মধ্যে একজনকে দেখা যায়, বাড়িটিপ বাইরে পার্ক করা একটি মোটরসাইকেলে কিছু একটা রাখতে। সেটি বন্দুক না অন্য কিছু ছিল, তা অবশ্য সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যায়নি। রাখি ত্যাগীর দাবি, এর কিছু সময় পরই পুলিশের একটি অন্য দল এসে তাদের বাড়িতে হানা দিয়েছিল। তল্লাশির সময়, মোটরসাইকেল থেকে পিস্তলটি উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি করেছিল তারা। তারপর, অশোককে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
In UP’s Meerut, a family alleged two cops from the local police station planted a gun in the house and later arrested a youth Ankit Tyagi under Arms Act. The family has produced CCTV footage as evidence to corroborate their claims.
First video is of a cop allegedly planting… pic.twitter.com/UM6OzaCkPq
— Piyush Rai (@Benarasiyaa) September 27, 2023
রাখি জানিয়েছেন, বাইকটি তাঁর স্বামী অশোকের। তবে, অঙ্কিতই সেটি বেশিরভাগ সময় চালাত। রাখির অভিযোগ, জমি বিবাদ মামলায় তাদের বিরোধী পক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। তারা অর্থের বিনিময়ে পুলিশকে নিজেদের হাতের মুঠোয় করে নিয়েছে। তাদের নির্দেশেই পুলিশ মিথ্যা প্রমাণ সাজিয়ে, অঙ্কিতকে ধরে নিয়ে গিয়েছে। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, সিসিটিভি ফুটেজটির কথা জানার পর, পুলিশ তাঁর থেকে ফুটেজটি বাজেয়াপ্ত করার চেষ্টাও করেছে।
তবে, ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানাজানি হওয়ার পর, চাপ বেড়েছে পুলিশের উপর। মিরাটের পুলিশ সুপার কমলেশ বাহাদুর জানিয়েছেন, এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা হবে। কেউ অন্যায় করলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তবে তাঁর দাবি, মোটরসাইকেলে পিস্তল রাখা ছিল খবর পেয়েই তল্লাশিতে গিয়েছিল পুলিশ। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই সিসিটিভি ফুটেজটি দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই কনস্টেবলকে শনাক্ত করা হয়েছে। খারখাউদা থানা থেকে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশ লাইনে।