
লখনউ: নিজের বাড়ির বাইরেই গুলি করে হত্যা করা হল বিজেপি নেতা অনুজ চৌধুরীকে। উত্তর প্রদেশের সম্বলের এই ৩৪ বছর বয়সী বিজেপি নেতা থাকতেন মোরাদাবাদের দিল্লি রোডে অবস্থিত পার্শ্বনাথ হাউজিং সোসাইটিতে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেই আবাসনের মধ্যেই অনুজ চৌধুরীকে লক্ষ্য করে একাধিক গুলি চালানো হয়। আততায়ীরা একটি মোটরবাইকে করে এসেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ৩১৫ বোর এবং .৩২ বোরের পিস্তল থেকে গুলি চালানো হয়েছে। এই ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের ছবি ধরা পড়েছে আবাসনের ভিতরে লাগানো এক সিসিটিভি ক্যামেরায়।
সেই ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে, তাঁর অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে হাঁটছেন অনুজ চৌধুরী। এরপরই তিন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে দেখা যায় একটি মোটরবাইকে করে এসে, খুব কাছ থেকে অনুজ চৌধরীকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। অনুজ চৌধুরীর পরিবারবর্গ এবং প্রতিবেশীরা অবিলম্বে তাঁকে মোরাদাবাদের ব্রাইটস্টার হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। চিকিৎসা চলাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়।
UP Moradabad: Three people came on bike and shøt dead local BJP leader Anuj Chowdhary at point-blank range. pic.twitter.com/0bt2WOgOAZ
— زماں (@Delhiite_) August 10, 2023
স্থানীয় স্তরে রাজনীতিতে অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা ছিল অনুজ চৌধুরীর। তিনি বিজেপির কিষাণ মোর্চার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। শীর্ষস্থানীয় বিজেপি নেতা ও মন্ত্রীদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। বিশেষ করে উত্তর প্রদেশের জলশক্তি মন্ত্রী স্বতন্ত্র দেব সিংয়ের সঙ্গে তাঁকে প্রায়ই দেখা যেত। অনুজ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই এসএসপি হেমরাজ মীনা-সহ শীর্ষস্থানীয় পুলিশকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। পুলিশ তাঁর দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করা হচ্ছে, জায়গায় জায়গায় তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আততায়ীদের ধরার জন্য পুলিশের পাঁচটি পৃথক দল গঠন করা হয়েছে।
ঠিক কী কারণে অনুজ চৌধুরীকে হত্যা করা হল, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে, ২০২১ সালে সম্বল জেলার আসমাউলি ব্লক প্রধান পদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। কিন্তু অনিকেত নামে এক ব্যক্তির কাছে পরাজিত হন। ভোটের পর থেকে দুজনের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছিল। ব্লক প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথাও ঘোষণা করেছিলেন অনুজ চৌধুরী। পুলিশ জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে এই অনিকেত এবং অমিত চৌধরী নামে তাঁর দুই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের হাত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে নিহত নেতার পরিবার। আগেই তাঁকে হত্যার চেষ্টা হতে পারে বলে পুলিশকে জানিয়েছিলেন অনুজ। তাঁকে বন্দুকধারী পুলিশের সুরক্ষাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি, অনিকেত গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর শত্রুতা মিটে গিয়েছে বলে মনে করেছিল পুলিশ। আর তাই, তার সুরক্ষা প্রত্যাহার করা হয়েছিল।